Thursday, 30 September 2021

কাক মা - কোকিল মা

কাক-মা জানত তার বাসায় কোকিলের ডিম।

সে চুপিসারে কোকিল-মাকে তার বাসা থেকে বেরোতে দেখেছিল। বাসায় ফিরে সে গুণে দেখেছিল, তার বাসায় ডিমের সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটেছে।

জানলেও সে কিচ্ছুটি বলল না কাউকে। ধৈর্য ধরে ডিমে তা দিল, বাচ্চা হলে তাকে পোকাটা-মাকড়টা খাইয়ে বড় করল। সে জানত, এই অবোধ শিশু একদিন ভিনস্বরে গেয়ে উঠবে গান, আলাদা করে নেবে নিজেকে।

সবই জানত কাক-মা, কিন্তু বুঝতে দিল না কাউকে।

সবাই ভাবল, তার মত বোকা আর কেউ হয় না, তাকে বারবার বোকা বানিয়ে যায় কোকিল-মা। দুনিয়ার কাছে বোকা হয়েও সে চুপ করেই থাকল, নইলে কি হত কোকিলের ছানাগুলোর? জন্মই যে হত না তাদের! জন্ম না হলে কেই বা গাইত বসন্তদিনের অমন বন-মাতানো মন-মাতানো গান ? মা যে তাদের উড়নচণ্ডী ! বাসা বানানোর ধৈর্য নেই, সারাক্ষণ শুধু উড়ে-উড়ে সুরে-সুরে ঘুরে-ঘুরে বেড়াচ্ছে।

তাকে অবশ্য দোষ দেয় না কাক-মা। সবাই কি আর একরকম হয়? সে নিজে কি অমন গাইতে পারবে কোনদিন? যে পারে সে নাহয় একটু কম সংসারী হলই! তার ছানাদের বড় করে দিতে কোনও আপত্তি নেই কাক মায়ের। এক-একজন এক-এক ধারার বলেই না এত রঙ, এত রূপ, এত সুর এই জগতটায় !

কোনও এক বসন্তদিনে নিজের বাসায় বসে দূরে কোনও কোকিলের কুহুরব শুনে স্বরটা কেমন চেনা চেনা লাগে কাক-মায়ের। খুশিতে তৃপ্তিতে চোখ বুজে আসে। মনে মনে কত যে আশীর্বাদ সে করে তাদের! আহা, বাছারা! বেঁচে থাকো। কাক-মাকে নাই বা মনে করলে, মধুর গানে ভুবনখানি ভরে রাখো।

দুনিয়ার সবাই তাকে বোকা ভাবলেও একজন কিন্তু ঠিকই চিনেছে তাকে। নইলে কেনই বা সে ডিম পাড়বার সময় হলেই বারবার সেই কাক-মায়ের বাসাতেই ফিরে ফিরে আসে? কাক-মা আর কোকিল-মায়ের এ এক অদ্ভুত সম্পর্কের রসায়ন।

শুভচিন্তক

বউ মন্দিরের সামনে গাছে মনষ্কামনা পূরনের জন্য ঢিল বাঁধতে গিয়ে, খানিক কি ভেবে, ঢিল না বেঁধেই ফেরত এল। স্বামী জিজ্ঞেস করল, কি হল, ঢিল বেঁধে ভগবানকে ডাকলে মনষ্কামনা পূরণ হয়, বাঁধতে গিয়েও বাঁধলে না কেন? বউ বলল, ঠাকুরের কাছে বলব ভেবেছিলাম, আমার স্বামীকে ভালো রাখো, ওর সমস্ত কষ্টের কারন সরিয়ে নাও। তারপর, মনে হল, এসব শুনে ভগবান আমাকেই না তুলে নেয়, তাই ঢিল ফেলে চলে এলাম।
🤣🤣🤣

খেলা

স্বামী-স্ত্রী ঘরে বসে ছিল।
লকডাউন। 🙍🏻‍♀️🙍🏻

বউ বলল, চলো সময় কাটাতে দুজনে একটা খেলা খেলি। 🙋🏻
তুমি একটা কাগজে পাঁচজন নারীর নাম লেখো, যাদের তুমি পছন্দ করো। আর আমি পাঁচজন পুরুষের নাম লিখছি, যাদের আমি পছন্দ করি। 🤺

দুজনে কাগজ-কলম নিয়ে লেখা শুরু করে দিল।🧑🏻‍💻👩🏻‍💻

কিছুক্ষণ পরে কাগজ খোলা হলো।

বউ লিখেছে:-
■ ব্র্যাড পিট
■ সৌরভ গাঙ্গুলী
■ উত্তমকুমার
■ ওস্তাদ জাকির হোসেন
■ হৃতিক রোশন

স্বামী লিখেছে:-
◆ রিমা (ছেলের স্কুলের বন্ধুর মা)
◆ অঙ্কিতা (বউয়ের মামাতো বোন)
◆ সীমা (বউয়ের বান্ধবী)
◆ শবনম (সামনের ফ্ল্যাটের বৌদি)
◆ অপর্ণা (ছেলের গৃহশিক্ষিকা)
😵‍💫🤢🤢🤢🤢🤢😵‍💫

মরাল অব দ্য স্টোরি:-
পুরুষ বাস্তববাদী। নারী থাকে স্বপ্নের জগতে।👼👼

★এই খেলার পরিণতি:
● স্বামী দশ দিন ধরে হোটেলের খাবার খাচ্ছে 🙇🙇
● ড্রয়িংরুমের সোফায় ঘুমোচ্ছে 🤕
● অপর্নার চাকরি গেছে🥵
● অঙ্কিতার মোবাইল নাম্বার ও ফেসবুক ২টোই ব্লক🥴
● বউ সীমাকে বাড়িতে আসতে বারণ করেছে😔
● সামনের ফ্ল্যাটের দিকের জানালায় কাঠের ব্যাটাম দিয়ে পার্মানেন্ট বন্ধ😑
● অনলাইন ক্লাস শেষে স্কুল খুললে রিমার কি ব্যবস্থা হবে সেটা এখনও অজানা 🤔🤷

বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ:-
এই বিপজ্জনক খেলা নিজের ঘরে খেলবেন না।আমার মনে হয় একটা বয়েসের পরে খেলা ধুলা না করাই ভালো🙂🙂
প্রাণায়াম, যোগাসন, গীতা পাঠ করে সময় কাটানো নিরাপদ 😁🤗

মোবাইল

অফিস যাবার পথে এক ভদ্রলোকের মোবাইল হারিয়ে গেল। অফিস পৌঁছে কাজের চাপে তিনি মোবাইলের কথা ভুলেই গেলেন।

বিকেলে বাড়ি ফিরে এক ভয়ানক পরিস্হিতির সম্মুখীন হলেন তিনি।

বাড়িতে শ্বশুর শাশুড়ি সশরীরে উপস্হিত। শুধু তাই নয়...! কেঁদে কেঁদে স্ত্রীর চোখ রক্তবর্ণ....। আর দরজার পাশে ব্যাগ, স্যুটকেস গুছিয়ে রাখা..। তারমানে চলে যাবার প্রস্তুতি। 

আশ্চর্য্য হয়ে ভদ্রলোক জানতে চাইলেন, "কি হয়েছে!"

স্ত্রী কাঁদতে কাঁদতে নিজের মোবাইলে স্বামীর থেকে পাওয়া মেসেজ দেখালেন। লেখা রয়েছে....

‘আজ থেকে আমি তোমাকে ত্যাগ করলাম।’

অফিস যাবার পথে নিজের মোবাইল হারিয়ে যাবার বিষয়টি ভদ্রলোক বুঝিয়ে বললেন। অর্থাৎ তিনি কিছুতেই এই মেসেজটি পাঠাতে পারেন না। কিন্তু স্ত্রীর কান্না আর থামে না।

অতঃপর ভদ্রলোক স্ত্রীর মোবাইলের লাউড স্পিকার অন করে নিজের হারিয়ে যাওয়া মোবাইল নম্বরে ফোন করলেন।

বিপরীত দিক থেকে একজন লোক ফোনটি ধরল।
ভদ্রলোক বললেন, "আপনি কি আমার মোবাইলটি পেয়েছেন?"

উত্তর - হ্যাঁ।

 "আমার স্ত্রীর কাছে আপনি মেসেজ পাঠিয়েছন?"

হ্যাঁ।

 "কেন?"

মশাই, আপনার স্ত্রী মেসেজ করে করে আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছে!

মেসেজগুলি নিম্নরূপঃ

             কোথায় আছো?

             অফিস পৌঁছে গেছো কি?

             কি করছো?

             উত্তর দিচ্ছো না যে!

             কাজ কি খুব বেশি?

             কখন আসবে?

 আসার সময় এই এই জিনিসগুলো নিয়ে আসবে কিন্তু।

আলু,
পটল,
জিঙে,
উচ্ছে,
বেগুন,
পেঁয়াজ,
কাঁচা লঙ্কা,
আদা,
রসুন,
কুমড়ো,
চিচিঙ্গা,
নারকেল,
ধনেপাতা,
লাউ,
শিম,
বিট,
গাজর,
বিনস,
বড়ি,
সমস্ত মশলা পাতি

             তাড়াতাড়ি এসো।

             আর শোনো ... আসার সময় মাংস নিয়ে আসবে?

অফিস থেকে সোজা বাড়ি এসো কিন্তু ..... আবার আড্ডা দিতে চলে যেও না যেন!

             ক’টায় আসছো?

             অফিস থেকে বেরিয়ে ফোন করো।

             আমি কিন্তু ফোনের অপেক্ষা করব। 

             কোন উত্তর দিচ্ছো না কেন?

কার সাথে এত বিজি আছ?

আজকে বাড়ি আসো তোমার একদিন কি আমার একদিন 

আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছে আপনার স্ত্রী।

আর আপনার স্ত্রী কি সারা মাসের সব্জী একদিনেই খাবে নাকি?

 মূহুর্তে মূহুর্তে মেসেজের আওয়াজ ..... রোজ রোজ আপনি এসব সহ্য করেন কি করে?আপনি একটা ভীতুর ডিম.....
তাই, শেষ পর্যন্ত আমি বাধ্য হয়ে ত্যাগ করার কথা লিখে দিলাম। ......... তারপর গিয়ে মেসেজ আসা বন্ধ হল!।

শারীরিক চাহিদা

অনেক রাত...। ছেলেটি মেয়েটিকে মেসেজ করল -----

ইয়ে.. মানে তুমি মাইন্ড করতে পারবে না কিন্ত।
- OK.. বলুন।
- পছন্দ না হলেও ব্লক করে দিয়ো না প্লিজ।
- আচ্ছা, কী এমন কথা বলবেন শুনি...! 
- হুমমম্, সরাসরিই বলি। তুমিও এডাল্ট, আমিও এডাল্ট।
- হ্যাঁ তো... 
- এছাড়া ফেসবুক ফ্রেন্ডের বাইরে আমাদের পরিচয় তুমি মেয়ে আর আমি ছেলে।
- হুমম্।
- এখন গভীর রাত।
- তারপর?
- এই সময় আমাদের শরীরের একটা চাহিদা থাকে... মানে নীড্ আর কী...। জিনিসটা সবসময়ই থাকে কিন্তু রাতে তার চাহিদা বেড়ে যায়। রাত যত বাড়ে চাহিদাও তত বাড়ে।
- হোয়াট্...? 
- জিনিসটা তোমারো দরকার আমারও দরকার।
- এক্সকিউজ মি...! 
- লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই, এটাই স্বাভাবিক... ফিজিক্যাল নীড্৷ পৃথিবীর সবারই থাকে এই চাহিদা। বুঝতে পারছো আমি শরীরের কোন চাহিদার কথা বলছি? যেটা সারাদিন থাকে.. কিন্তু রাতে বাড়ে।
- না বোঝার কিছু নাই।
- তাইলে বলেই ফেলি, নাকি?
- হুমম্... বলুন।
- শরীরের সেই চাহিদাটার নাম হলো ঘুম। আমি যদি বলি অনেক রাত হয়েছে.... চলো.. দু'জনে ফেসবুকে টাইম নষ্ট না ক'রে এখন ঘুমিয়ে যাই, তুমি কি রাগ করবে?

- শালা হতভাগা, যা ঘুমো 😴.... 😡

মানবতার অনেক রূপ

একটা ছেলে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। হঠাৎ তার সামনে একটি চীনা ভদ্রলোক গাড়ী চাপা পড়লো। তাকে সবাই মিলে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে যে যার সরে পড়লো, কিন্তু সরলো না ঐ ছেলেটি। তার নাম রতন। রতন সারারাত হাসপাতালে বসে থেকে ভোরের দিকে যখন লোকটির হুঁশ ফিরলো, তখন তাকে দেখতে গিয়ে রোগীর বেডের মাথার কাছে নিশ্চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো।
চীনা ভাষা রতন বোঝে না, কিন্তু চীনা মরণাপন্ন লোকটি বারবার হাতজোড় করে, চোখে জল নিয়ে বলে চললো-- সু তাই কোয়াং তির সাই। কিছুক্ষণ চোখের জলে ভেসে করুণ কন্ঠে এই কথা বলার পর লোকটি চিরকালের জন্য চোখ বন্ধ করলো।

ঘটনাটা এখানেই শেষ হতে পারতো, কিন্তু রতন তো শেষ হতে দিলো না। রতন বিভিন্ন সূত্র জোগাড় করে নিজের টাকায় পৌঁছে গেল চীনের হুনান প্রদেশে, ঐ লোকটির একমাত্র পুত্র এবং তার স্ত্রীর বাড়িতে। মৃত্যুর সংবাদ আগেই এসেছিল। রতন কিছুক্ষণ ইতস্ততঃ করে সিক্ত কন্ঠে নিজের মনেই বলে উঠলো-- সু তাই কোয়াং তির সাই।

লোকটির ছেলেটি ভীষণ চমকে উঠে ইংরাজিতে বললো- আপনি হঠাত এই কথা বলছেন কেন?

রতন বললো- এর মানে কি?

ছেলেটি হতভম্ব হয়ে বললো-- এর মানে, শুয়োরের বাচ্চা, অক্সিজেন পাইপের থেকে পা টা সরা।

এরপর রতন ভারতে ফিরে এলো।
🤣🤣🤣

পুলিশের কবলে বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়

১২ই সেপ্টেম্বর বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের জন্মদিন। মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মারা যান বিভূতিভূষণ। মৃত্যুর তিন বছর আগে একমাত্র ছেলে তারাদাস বন্দোপাধ্যায়(১৯৪৭-২০১০) জন্মগ্রহণ করেন। পুত্র তারাদাস বন্দোপাধ্যায়ের স্মৃতিকথা থেকে পাওয়া।

 তারাদাস বাবুর বয়েস তখন অল্প, বছর বাইশ তেইশ হবে। পাড়ার একজন দাদা স্থানীয় লোক অবসরপ্রাপ্ত ডাকসাইটে পুলিশ অফিসার পঞ্চানন ঘোষালের সাথে দেখা করতে যাচ্ছেন শুনে তারাদাসবাবুও চললেন তার সাথে। বাঙালির শার্লক হোমস এই পঞ্চানন ঘোষাল(১৯০৭-১৯৯০) অপরাধ বিজ্ঞান সাহিত্যের জনক। ক্রিমিনাল সাইকোলজিতে ডক্টরেটধারী প্রথম ভারতীয়। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের নির্দেশেই ক্রাইম উপন্যাস লেখা শুরু করেছিলেন। তারাদাস বন্দোপাধ্যায় ছিলেন তাঁর মুগ্ধ পাঠক। সুতরাং পাড়ার দাদার সাথে পঞ্চানন ঘোষালের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ তিনি হাতছাড়া করতে চাইলেন না। গেলেন তাঁর কাছে এবং সঙ্গের দাদা পরিচয় করিয়ে দিলেন...বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলে, শুনে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকলেন পঞ্চাননবাবু। তারপর বললেন , "তোমার বাবাকে একবার পুলিশ অ্যারেস্ট করেছিল,জানো ?"।

তারাদাসবাবু বলে উঠলেন , "অসম্ভব। কখনো হতে পারে না। আমি সকলের মুখ থেকে শুনে বা পড়ে যা জেনেছি তাতে কখনো তা হতে পারে না। আমার বাবা কোনোদিন সেরকম ছিলেন না"। 
--"সেসব তোমার জানতে পারার কথা নয়, তাই জানতে পারনি । জোড়াবাগান থানায় গিয়ে খোঁজ করলে পেতে পারো। অবশ্য অত পুরোনো রেকর্ড আছে কি না কে জানে। আসল কথাটা আগে শোনো, সন্ধ্যার মুখে বাইরের কাজ টাজ সব সেরে থানায় ফিরেছেন বড় বাবু। থানার কাজকর্মের খোঁজ নেওয়া চলছে তখন। হাজত-বাবু হাজতে যারা ছিল তাদের বের করে এনে বড় বাবুর সামনে হাজির করল। বড় বাবু সব শুনে সিদ্ধান্ত নেবেন কাকে রাখা হবে , কাকে ছাড়া হবে। যাদের বের করা হল তাদের মধ্যে ধুতি শার্ট পরা একজন ভদ্রলোককে দেখে বড় বাবু জিজ্ঞেস করলেন, "আরে এ তো ভদ্রলোক দেখছি , এ আবার কী করল"। 

হাজত বাবু বলল,"স্যার , উনি ঐখানে থানার দেওয়ালের খাঁজের মধ্যে পেচ্ছাপ
করছিলেন"।
 
"অ্যাঁ, থানার দেওয়ালে পেচ্ছাপ ? দেখে তো মনে হচ্ছে শিক্ষিত , পোশাকে আসাকে তো বেশ ভদ্দরলোক, ভদ্দরলোক লাগছে, খোলা জায়গায় এসব করতে নেই জানেন না ?"

--- "আর কোনোদিন হবে না। বিশ্বাস করুন, না পেরে বাধ্য হয়ে করে ফেলেছি। খুব জোর চেপেছিল, কোথাও কোনো টয়লেট খুঁজে পাই নি। আর পারছিলাম না, কাপড়ে চোপড়ে হয়ে যেত। তাই একটু আড়াল দেখতে পেয়ে এখানে করে ফেলেছি। এটা যে থানা বুঝতে পারিনি ।"

--- "কাপড়ে চোপড়ে হয়ে যেত বলে অন্যের বাড়ির দেওয়ালে পেচ্ছাপ করবেন ? থানার কথা নাহয় বাদই দিলাম । কী করেন ?"

--- "আজ্ঞে আর হবে না । আমি শিক্ষকতা করি ।"

--- "শিক্ষকতা করেন ? কোন স্কুল ?"

--- "খিলাৎচন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুল।" ধর্মতলাস্থ স্কুলটির তখন বেশ নাম ডাক ছিল।

--- "ওরে বাবা, অমুক স্কুল ? স্কুলটা কোথায় জানেন ?"

--- "বিশ্বাস না হলে ফোন করে দেখতে পারেন। আমার কাছে ফোন নাম্বার আছে দিতে পারি"।

ফোন নাম্বার নিয়ে ফোন করে দেখলেন বড় বাবু। কথা সত্যি। এবার আরো ঝেঁঝেঁ উঠলেন। "তাহলে তো সোনায় সোহাগা , মাস্টারমশাই হয়ে এসব করছেন, ছাত্ররা কী শিখবে ?"।

--- "বলছি তো ভুল হয়ে গেছে। আগে কখনও হয়নি। অবস্থার ফেরে হয়েছে আর কখনো হবে না"।

বড়বাবুর চোখ মুখ দেখে কোনো আশা পাচ্ছিলেন না ভদ্রলোক। ভাবছিলেন হয়ত আবার কোন কেস লাগিয়ে কোর্টে পাঠিয়ে দেবে। লোক জানাজানি হবে, হয়রানির শেষ থাকবে না। তাই বড় বাবুর সহানুভূতি আদায় করার জন্য বললেন, "এ ছাড়া আমি একটু লেখালিখিও করি"।

-- "আচ্ছা ! তা কী লেখেন শুনি" ?

-- "গল্প, উপন্যাস, এইসব"।

-- "কী উপন্যাস ?"

-- "আপনি নাম শুনেছেন কি না জানি না,আমার একটা লেখা একটু নাম করেছে,'পথের পাঁচালী'।"

--- "এবার ঠাটিয়ে একটা চড় কষাব। অনেক সহ্য করেছি। 'পথের পাঁচালী' কার লেখা জানেন ?"

--- "আজ্ঞে, আমার লেখা, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন আপনাকে নাম বললাম তো যখন স্কুলে ফোন করলেন !"

 বড়বাবু অবাক দৃষ্টিতে মুখের দিকে চেয়ে থাকলেন কিছুক্ষণ। কী যেন পড়বার চেষ্টা করলেন। তারপর বিস্ময় তার কণ্ঠস্বরে।
--- "আপনি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ?"

বলতে বলতে বড় বাবু চেয়ার ছেড়ে উঠে টেবিলের পাশ দিয়ে ঘুরে এসে তথাকথিত "আসামীর" পায়ের উপর গড় হয়ে পড়লেন তিনি। মাথা ঠুকে ঠুকে প্রণাম সেরে উঠে দাঁড়ালেন। বললেন, "যান, মুতুন, মুতুন, এই থানার যেখানে খুশি মুতুন, যত খুশি মুতুন, পূণ্যভূমি হয়ে উঠবে এ থানা ।"

 এই পর্যন্ত বলে পঞ্চাননবাবু বললেন তারাদাসবাবুকে,"বুঝলে , সত্যি সত্যিই তোমার বাবাকে পুলিশে ধরেছিল"।

তারাদাসবাবু বললেন, "এ আপনার বানানো গল্প। আপনি লেখক মানুষ, সামান্য একটু কিছু কারো কাছে শুনেছেন হয়তো, তাই দিয়ে এত সুন্দর একটা গল্প বানিয়ে ফেললেন"।

--- গল্প হবে কেন ? আর, অন্যের মুখ থেকেই বা শুনতে হবে কেন ? সেদিনের সেই বড়বাবুটা যে আমিই। আমিই সেই পঞ্চানন ঘোষাল যিনি পুণ্য অর্জন করেছিলাম।।

Tuesday, 28 September 2021

দুই বিঘে জমির মর্ম কথা

সেদিন ক্লাসে বাংলার স্যার পচাকে জিজ্ঞেস করল, "বলতো পচা, রবিঠাকুরের দুই বিঘা জমি কবিতায় সবথেকে পাজি এবং বদমাশ লোকটা কে?"

"এটা কি কনো প্রশ্ন হলো স্যার? এটাতো সবাই জানে যে, সবথেকে পাজিএবং বদমাশ লোকটার নাম উপেন, আর ভালো লোকটা হলো জমিদার।"

"আমাকে বোঝা হতচ্ছাড়া,, উপেন কিকরে পাজি হলো আর রাজা কি করে ভালো হলো। আর যদি বোঝাতে না পারিস আমি মেরে তোর ঠেং খোড়া করে রেখে দেবো।"

"এ আর এমন জটিল কি? আপনি মনেহয় পুরো কবিতাটাই ঠিক মতো পড়েননি, যদিও বা পড়েছেন ঠিকমতো বুঝেউঠতে পারেননি স্যার? 

দেখুন কবিতার শুরুতেই আছে "শুধু বিঘে দুই ছিল মোর ভুঁই, আর সবই গেছে ঋনে।"
উপেন যৌবনে রোজগার বলতে কিছুই করেনাই,
ঋন করে ভালোমন্দ খেয়ে জমি বিক্রি করে পরিশোধ করেছে, এখন যখন মাত্র দুই বিঘা জমিতে এসে ঠেকেছে তখন জমির প্রতি দরদ যেন উথলে উঠছে।

এবার আসাযাক উপেনের ছাত্রাবস্থার কথায় -
"একে একে মনে উদিল স্মরনে বালক - কালের কথা।
সেই মনে পড়ে জ্যেষ্ঠের ঝড়ে রাত্রে নাহিকো ঘুম -
অতি ভোরে উঠি তাড়াতাড়ি ছুটি আম কুড়াবার ধুম :
সেই সুমধুর স্তব্ধ দুপুর, পাঠশালা - পলায়ন -"
এবার ভাবুন সকাল দুপুর রাত্রি শুধুই আমের চিন্তায় মসগুল, পড়াশোনা করার বালায় নাই, এতো পাজি যে স্কুলে যাতে পড়াশোনা করতে না হয় তার জন্য সেখানেও ফাঁকি। যদি জীবনে পড়াশোনাটা ঠিকঠাক করতো তাহলে টিপছাপ দিয়ে দুই বিঘা জমিটা রাজা চালাকি করে নিতে পারতো না।

এবার আসি উপেনের বার্ধক্য বয়সে -
"মনে ভাবিলাম, মোরে ভগবান রাখবে না মোহগর্তে, 
তাই লিখি দিল বিশ্বনিখিল দু বিঘার পরিবর্তে।
সন্ন্যাসীবেশে ফিরি দেশে দেশে হইয়া সাধুর শিষ্য"।

এই পর্যন্ত পড়ে ভেবে ছিলাম শেষ বয়সে এসে ফাঁকিবাজ উপেন এবার বোধহয় ধর্ম কর্মে মনদেবে, কিন্তু ভবি ভোলবার নয়, সাধুসঙ্গ ছেড়ে সেই আমতল, ওখানেও ফাঁকি। ওরে পাগলা দুই বিঘার মোহ কাটাতে পারছিস না, আর তুই হবি সর্বত্যাগী সন্ন্যাসী???
অন্যদিকে জমিদারটাকে দেখুন কি সুন্দর অমায়িক ব্যবহার।
"বাবু বলিলেন, বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।"

লাইনটা লক্ষ্য করুন, চুরি বলেনি, বলেছে কিনে নেবো। তাছাড়া অতবড় একজন মানুষ তার কনো অহংকার নেই, উপেনের মতো অকাট মুর্খকে পর্যন্ত তুমি তুমি করে কত মিষ্টি ভাবে কথা বলছে।

"বাপু, জান তো হে, করেছি বাগানখানা, 
পেলে দুই বিঘে প্রস্থে ও দীঘে সমান হইবে টানা। "

শুধু সৌখিন মানুষ নয়, পরিবেশ সচেতনও বটে... সুন্দর একখান বাগান করার স্বপ্ন দেখছেন। নগদ মূল্যে দামদিয়ে জায়গাটা কিনে বাগান করবেন বলে মনস্থির করেছেন। এটা উপেনের সহ্য হলো না, যে যৌবনে সব বিক্রি করে পেটায় নমো করলো, আর বৃদ্ধ বয়সে এটা নগদে বিক্রি করতে ওর গায়ে লাগছে। আসলে তা নয়, আসল কথা হল হিংসে জমিদারের বাড়বাড়ন্ত দেখে হিংসায় জ্বলে যাচ্ছে, অন্যের ভালো দুচোখে সহ্য করতে পারে না । নিজে তো কিছু করতে পারেনি, তাই সুন্দর বাগান করতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা সমাজেরও ক্ষতি..
এবার আপনিই বলুন স্যার কে ভালো আর কে খারাপ?

(আজ নিয়ে সাতদিন হলো স্যারের জ্ঞান ফেরেনি..... হয়তো কোভিড2 আক্রান্ত.....)

কনট্যাক্ট এবং কানেকশন

একদিন এক সাংবাদিক এক সন্যাসীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন।
সাংবাদিক- আপনার গতকালের বক্তৃতায় আপনি বলেছেন, কনট্যাক্ট এবং কানেকশন। আমি দ্বিধায় আছি। একটু ব্যাখ্যা করবেন?
সন্যাসী মৃদু হাসলেন এবং আপাত দৃষ্টিতে প্রশ্ন থেকে নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে বললেন- আপনি নিউইয়র্কে থাকেন?
- হ্যাঁ।
- বাড়িতে কে কে আছেন?
সাংবাদিক ভাবলেন উনি প্রশ্নটা এড়াতে চাইছেন, তাই এরকম ব্যাক্তিগত প্রশ্ন করছেন। তবুও বললেন- মা মারা গেছেন। বাবা আছেন। আর তিন ভাই ও এক বোন। সবাই বিবাহিত।
সন্যাসী মৃদু হেসে বললেন- বাবার সঙ্গে কথা হয়?
সাংবাদিক বিভ্রান্ত।
সন্যাসী জিজ্ঞেস করলেন
- বাবার সঙ্গে শেষ কবে কথা হয়েছে?
সাংবাদিক নিজের বিরক্তি চেপে রেখে বললেন- মাস খানেক হবে।
সন্যাসী- তোমাদের ভাইবোনদের মাঝে মধ্যেই দেখা হয়? শেষ কবে ফ্যামিলি গেট টুগেদার হয়েছে?
সাংবাদিক যথেষ্ট ঘামতে শুরু করেছেন।
মনে হচ্ছিল যেন সন্যাসীই সাংবাদিকের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন।
লজ্জাবনত হয়ে উত্তর দিলেন- দুবছর আগে খ্রিস্টমাসের সময়।
- সবাই একসঙ্গে কদিন কাটিয়েছিলেন?
- দুদিন।
-বাবার পাশে বসে ছিলেন কতক্ষণ?
সাংবাদিক বিভ্রান্ত হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
- আপনারা কি একসঙ্গে ব্রেকফাসট, লাঞ্চ, ডিনার করেছিলেন? উনি কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করেছিলেন? মা মারা যাওয়ার পর কি ভাবে উনি সময় কাটাচ্ছেন, জিজ্ঞাসা করেছিলেন?
সাংবাদিকের চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগল।
সন্যাসী তাঁর হাত ধরে বললেন- লজ্জিত হবেন না। অনুশোচনা করবেন না। আমি দুঃখিত আপনাকে অজান্তে আঘাত দিয়ে থাকলে। আসলে এটাই আপনার প্রশ্নের উত্তর ।
বাবার সঙ্গে আপনার কনট্যাক্ট আছে কিন্তু কানেকশন নেই। কানেকশন হৃদয়ে হৃদয়ে হয়। একসঙ্গে বসা, খাবার ভাগা ভাগি করা খাওয়া। একে অপরের খেয়াল রাখা, স্পর্শ করা, হ্যান্ডশেক করা, চোখে চোখ রাখা, একসঙ্গে সময় কাটানো। আপনাদের সব ভাই বোনের কনট্যাক্ট আছে কিন্তু কানেকশন নেই।
.
.
*আজকে এটাই বাস্তব*
 
অনেকেই গর্ব করে বলি আমার হাজার হাজার কনট্যাক্ট আছে।
কিন্তু কানেকশন?

Sunday, 26 September 2021

ভবেশ পুরান

ভবেশবাবু মাথা ফাটিয়ে ঘরে এসেছেন।

স্ত্রী বললেন--- হে রাম, তোমার মাথা থেকে এতো রক্ত কেন বেরুচ্ছে, কি হয়েছে। 

ভবেশবাবু বললেন-- এক বন্ধু মাথায় পাথর ছুড়ে মেরেছে।

স্ত্রী বললেন-- তাহলে তুমি তাকে উল্টো পাথর মারলে না কেন, তোমার হাতে কি কিছু ছিল না?

ভবেশবাবু বললেন- আমার হাতে ওর স্ত্রীর হাত ছিল ৷

🤣🤣🤣

পুরুষরা কী করে?

সেরা 😍😍😍

ছেলে বাপের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, আচ্ছা বাবা বিয়ের পর পুরুষরা কী করে? 

বাবা ছেলেকে বললো,আমার কাছে এসে বসো।

বসার পরেই বাপ রেগেমেগে ছেলেকে ধমক দিয়ে বললো, আমাকে একটু একা থাকতে দাও, ভাগো এখান থেকে!! তোমাকে আমার সহ্য হচ্ছে না।

ছেলে ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি বাবার রুম থেকে বের হয়ে গেলো। 

এবার বাপ আরো বেশি রেগে গিয়ে চিৎকার করে বললো, তোমার এতো বড় সাহস তুমি আমাকে একা রেখে চলে যাও? আমাকে ইগনোর করো? তুমি তো দেখি আমাকে ভালোই বাসো না।

কাজেই ছেলেটি আবার গিয়ে বাপের কাছে বসলো। 

বসার পরেই আবারও বাপ রেগেমেগে ছেলেকে ধমক দিয়ে বললো,তোমাকে বললাম না, আমাকে একটু একা থাকতে দাও?কথা কানে যায় না? ভাগো এখান থেকে!! 

ছেলে ভয় পেয়ে তাড়াতাড়ি বাবার রুম থেকে বের হয়ে গেলো। 

এবার বাপ আরো বেশি রেগে গিয়ে চিৎকার করে বললো, তোমার এতো বড় সাহস তুমি আমাকে একা রেখে চলে যাও? আমাকে ইগনোর করো? আমি বললেই আমাকে রেখে চলে যাবে?

কাজেই ছেলেটি আবার গিয়ে বাপের কাছে বসলো। 

বসার পরেই আবারও বাপ রেগেমেগে ছেলেকে ধমক দিয়ে বললো,তোমাকে বললাম না, আমাকে একটু একা থাকতে দাও?কথা কানে যায় না? ভাগো এখান থেকে!! 

এবার ছেলে হাউমাউ করে কান্না শুরু করলো। বললো, বাবা, এই সাতসকালে তুমি আমার সাথে কী শুরু করলে? 

বাবা মুচকি হেসে বললেন, তোমাকে শুধু বিয়ের পর পুরুষদের কী করতে হয় সেটাই বুঝাচ্ছিলাম। 

বলাই বাহুল্য, ছেলেটা পরবর্তী জীবনে আর বিয়ের নাম মুখে নেয়নি।
🤣🤣🤣🤣🤣🤣

Monday, 20 September 2021

আড্ডা




খরগোশের বাড়িতে জম্পেশ আড্ডা হচ্ছে। খরগোশ, শিয়াল, কচ্ছপ আর কুকুর মিলে আসর জমিয়ে তুলেছে ।

এরমধ্যে বিয়ার শেষ। কে বিয়ার আনতে যাবে এই নিয়ে তুমুল আলোচনার পর শেষে সবাই মিলে কচ্ছপকে রাজি করাল।

দু ঘণ্টা পরও কচ্ছপ বিয়ার নিয়ে ফেরে নি !!

খরগোশ : “ ব্যাটা ফাজিল !! এত আস্তে চলে যে কি বলব!! আমি একটু ঘুমোচ্ছিলাম বলে একটা রেস জিতে খুব তো বাহাদুরি দেখাল। দেমাগে মাটিতে পা পড়ে না!!”

কুকুর : “ আরে!! রাস্তায় কোথাও পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে মনে হয়!! এত্ত অলস ওটা !!

শিয়াল : “ব্যাটাকে পাঠানোই উচিত হয় নি!! ”

এমন সময় কচ্ছপ দরজা খুলে উঁকি দিয়ে বলল: “ এই !! আমার নামে এভাবে বাজে কথা বললে আমি যাব না বলে দিলাম।
😂

Friday, 17 September 2021

মহালয়া




- ও দাদা, নমস্কার, শুভ মহালয়া।

- মানে!

- মানে আবার কি, পূজো শুরু হয়ে গেল তাই বললাম।

- মানে!

- দূর মশাই, এর আবার মানে মানে কি?

- মানে, জানতে চাইছি, মহালয়ার সঙ্গে পূজোর কী

সম্পর্ক? এ তো আচ্ছা ক্ষ্যাপা লোক! মহালয়া মানেই তো দেবীর আগমনের শুরু, পূজো শুরু, এই যে দেখুন মা দুর্গার

মুখের ছবি দিয়ে 'শুভ মহালয়া' লিখে কত ছবি। - শুনুন, মহালয়ার সঙ্গে দুর্গাপূজোর আদৌ কোনো সম্পর্ক নেই। যারা মা দুর্গা'র ছবির সঙ্গে 'মহালয়া' লিখছে তারা

নিজেরাও জানেনা কত বড় ভুল করছে।

- যাঃ বাব্বা....! বলে কি, এতো সবজান্তা দেখছি।

- সবজান্তা নই, তবে এটুকু জানি যে, দুর্গাপূজোর সঙ্গে

এর কোনো সম্পর্ক নেই। -বললেই হলো নেই! সকালে রেডিওতে মহালয়া শোনেন না আপনি?

- ওটা মহালয়া নয়। ওটা 'মহিষাসুরমর্দিনী' নামের একটি অনুষ্ঠান। এর সঙ্গেও মহালয়া'র কোনো সম্পর্ক নেই। এই

দিনে অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার হয়, এই পর্যন্তই। - তাহলে মহালয়াটা কি ঘোড়ার ডিম, খায়, না মাখে?

- মহালয়া কথাটি এসেছে 'মহৎ আলয়' থেকে। হিন্দু ধর্মে মনে করা হয় যে পিতৃপুরুষেরা এই সময়ে পরলোক থেকে ইহলোকে আসেন জল ও পিণ্ডলাভের আশায়। প্রয়াত পিতৃপুরুষদের জল-পিণ্ড প্রদান করে তাঁদের 'তৃপ্ত' করা হয় বলেই মহালয়া একটি পূণ্য তিথি।

- সে তো জানি। ঘাটে ঘাটে সব মন্ত্র ফন্ত্র বলে। তাতে কী

হল? পুজোর আগে জল টল দিয়ে শুদ্ধ করা হল।

-শুদ্ধ, অশুদ্ধের ব্যাপার নয়। এর সঙ্গে মহাভারতের যোগ

আছে।

-কেলো করেছে। এখানেও মহাভারত?

- আজ্ঞে হ্যাঁ। মৃত্যুর পর কর্ণের আত্মা পরলোকে গমন করলে তাঁকে খাদ্য হিসেবে স্বর্ণ ও রত্ন দেওয়া হয়েছিলো। কর্ণ এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে তাঁকে বলা হয়, তিনি সারা জীবন স্বর্ণ ও রত্ন দান করেছেন, কিন্তু প্রয়াত পিতৃগণের উদ্দেশ্যে কখনও খাদ্য বা পানীয় দান

করেননি। তাই স্বর্গে খাদ্য হিসেবে তাঁকে সোনাই দেওয়া হয়েছে।

বিমর্ষ কর্ণ বলেন, তাঁর পিতৃপুরুষ কারা সেটা তো তিনি মৃত্যুর মাত্র একদিন আগেই জানতে পেরেছেন। তার দোষ কোথায়! যমরাজ তখন বোঝেন, সত্যিই তো, এতে কর্ণের কোনো দোষ নেই। এই কারণে কর্ণকে পক্ষকালের জন্য ফের মর্ত্যে ফিরে পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে অন্ন ও জল প্রদান করার অনুমতি দেওয়া হয়।

এই পক্ষই পিতৃপক্ষ নামে পরিচিত হয়। আর সেই

হিন্দুদের মধ্যে তর্পণের প্রথা চালু হয়।

- এ তো হেব্বি ক্যাঁচাল। এত সব তো জানতাম না।

- আরো শুনে রাখুন, পারলৌকিক ক্রিয়াকর্মের তিথি হিসেবে নির্দিষ্ট হওয়ায় একে 'শুভ' বলতে নেই।

- সে কি! শুভ মহালয়া বলবো না তাহলে? - না, বলবেন না। আপনার প্রিয়জনের শ্রাদ্ধের দিন কেউ

যদি আপনাকে 'হ্যাপি শ্রাদ্ধ' বা 'শুভ শ্রাদ্ধ' বলে, কেমন লাগবে?

আপনার

- হেব্বি মাথা গরম হয়ে যাবে। কিন্তু আমি তো না বুঝেই বলেছি।

- এমন না বুঝেই তো আমরা কতকিছু বলি। এবার বুঝলেন তো?

-বুঝলাম, তবে অভ্যাস বড় বালাই। এতদিনের অভ্যাস কি সহজে যাবে? আমরা হলাম গিয়ে 'পাবলিক', লোকে বলে তাই বলি। তা আপনার সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগলো। আপনি ভালো থাকবেন। 'শুভ মহালয়া' দাদা। চলি এবার।

Friday, 10 September 2021

চুরি




স্কুলে সাঁতার ক্লাসে একটা ছেলের তোয়ালে চুরি হয়ে গেছে।

পরের দিন ছেলের বাবা স্কুলে গিয়ে রেগে ক্লাস টিচারকে বলল :-- আমার ছেলের সাথে যারা পড়ে, তারা সব এক একটা চোর। বলুন, আমার ছেলের তোয়ালে চুরি করে নিয়েছে। এই শিক্ষা দেন আপনারা আপনাদের ছাত্রদের ??

ক্লাস টিচার: এরকম নয় স্যার, ভুল করে কোনো বাচ্চার ব্যাগে হয়তো চলে গেছে ।। আমরা খোঁজ করছি, আপনার ছেলের তোয়ালে কেমন দেখতে??

ছেলের বাবা:- সাদা রঙের তোয়ালে। ক্লাস টিচার:- কিন্তু সাদা তোয়ালে তো অনেক বাচ্চার কাছে আছে। অন্য কোন চিহ্ন যাতে আপনার ছেলের তোয়ালে চেনা যায়।

ছেলের বাবা:- তোয়ালের ওপর *ভারতীয় রেলে* র ছাপ দেওয়া আছে।

🤣🤣🤣

শিক্ষাব্যবস্থা




স্কুল পরিদর্শকঃ আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি কে?

লেবুঃ নরেন্দ্র মোদি স্যার!

পরিদর্শকঃ তোমাকে জিজ্ঞেস করছি প্রেসিডেন্ট কে?

লেবুঃ ইয়ে মানে প্রেসিডেন্ট? মমতা ব্যানার্জি স্যার!

পরিদর্শকঃ তুই ক্লাস এইটে উঠলি কীভাবে? আমি তোর নাম কেটে দেব..

লেবুঃ আমার তো স্কুলের খাতায় নামই নেই, আপনি কাটবেন কী?

পরিদর্শকঃ তার মানে?

লেবুঃ আমি স্কুলের মাঠে গরু চরাচ্ছিলাম, একজন স্যার বলল, তোকে কুড়ি টাকা দেব, তুই ক্লাসে কিছুক্ষনের জন্য বসবি!

পরিদর্শকঃ (খুব রেগে) ছিঃ মাস্টারমশাই, আপনাদের লজ্জা করে না? শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা? আমি আপনার চাকরি খেয়ে ফেলব..

শিক্ষকঃ কাকে ভয় দেখান? আমি মাস্টার না! সামনের মুদি দোকানটা আমার... মাস্টারসাহেব আমাকে বলল, শহর থেকে এক বেটা আসবে, আমি একটু হাটে গেলাম, আমার শালী আসছে, জরুরী কিছু কিনতে হবে... তুই একটু ক্লাসঘরে থাকবি!

পরিদর্শকঃ (ভীষণ রেগে,হেডস্যারের রুমে গেলেন) আপনি হেডস্যার হয়ে এইভাবে স্কুল চালাচ্ছেন?

প্রধান শিক্ষকঃ কেন কি হল? কোনও সমস্যা?

পরিদর্শকঃ আপনার লজ্জা করে না, নকল ছাত্র-শিক্ষক দিয়ে ক্লাস চালান?

প্রধান শিক্ষকঃ দেখুন আমার মামা এই স্কুলের হেডস্যার,

তিনি জমি কেনা-বেচার দালালি করেন! বর্তমানে এক কাস্টমারকে সাথে নিয়ে এক গ্রামে জমি দেখাতে গেছেন, আমাকে বলে গেছেন ইনস্পেক্টর এলে, তাঁর হাতে এই এক হাজার টাকার বান্ডিলটা দিয়ে দিস!

পরিদর্শকঃ এই যাত্রায় আপনারাও বেঁচে গেলেন...

আসলে আমার কাকা ইনস্পেক্টর, ঠিকাদারির কাজও করেন! টেন্ডার সাবমিট করতে কলকাতা কর্পোরেশনে গেছেন...

আমাকে বললেন,তুই আমার হয়ে পরিদর্শন করে আয়, যা পাবি অর্ধেকটা তোর!

Thursday, 9 September 2021

পালিয়ে অপমান




মেয়েটি পালিয়ে তার পছন্দের ছেলের সাথে বিয়ে করলো। অবশেষে সাত দিন পর যখন বাড়ি ফিরলো, মেয়ে কে সাত দিন পর দেখে..

বাবা: তুই যেদিন বাড়ি থেকে পরিবারের মুখে চুনকালি মাখিয়ে গেছিস সেদিন ই তুই আমার কাছে মারা গেছিস। আমি ভুলে গেছি যে আমার কোনো মেয়ে আছে।

মা বললো: তুই এ কাজ কিভাবে করলি। যাওয়ার আগে আমার কথা এক বার ও মনে আসলো না তোর?

ভাই বললো: শোন, তুই মা বাবা কে কাদিয়ে কখনই সুখি থাকবি না। তোকে আমার নিজের বোন ভাবতে আজ ঘৃনা করছে।

সব শুনে অবশেষে মেয়েটি বলল... আমি তোমাদের অপমান শুনব বলে এ বাড়িতে আসিনি। আমার নোকিয়া মোবাইলের সরু পিনের চার্জারটা ভুলে ফেলে গিয়েছিলাম ওটাই নিতে এসেছি.....

Popular Posts