শিবনাথ শাস্ত্রী
পন্ডিত শিবনাথ শাস্ত্রী ছাত্রদের পড়াচ্ছেন। স্কুলে ড্রাম ভর্তি রসগোল্লা এসেছে। তখন শাস্ত্রী সাহেব বললেন, ”এই ড্রামের সব রসগোল্লা তোমাদের মধ্যে কে সাবাড় করতে পারবে?” তখন সবাই একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলো। হঠাৎ একজন শিক্ষার্থী চিৎকার করে বলল, ” স্যার, আমি পারব।” পরমুহূর্তেই চাপাস্বরে বলল, “তবে একদিনে নয়।” সেদিনের সেই ছাত্রটির নাম ছড়াকার সুকুমার রায়।
_________________________
বিদ্যাসাগর
কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত যখন দারুণ অর্থকষ্টে ভুগছিলেন তখন বিদ্যাসাগর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। একদিন এক মাতাল বিদ্যাসাগরের কাছে এসে সাহায্য প্রার্থনা করলেন। বিদ্যাসাগরের সাফ সাফ জবাব তিনি কোন মাতালকে সাহায্য করবে রাজি নন। তখন ঐ মাতাল জানালো যে বিদ্যাসাগর তো মধুসূদনকে সাহায্য করেন ! কিন্তু মধুসূদনও তো মদ খান । তখন বিদ্যাসাগরের জবাব ছিল এমন, ”তুমি ওর মতো ‘মেঘনাদবধ’ কাব্য লিখে আনো। তোমাকেও সাহায্য করব।”
_________________________
স্বামী বিবেকানন্দ
গোরক্ষিণী সভার সভাপতি গিরধারী লালের সাথে একবার স্বামী বিবেকানন্দের দেখা হলে স্বামীজী কৌতূহলী হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেন,” আপনাদের সভার উদ্দেশ্য কী?” তিনি জানালেন গো- মাতাদের রক্ষা করাই তাদের ধর্ম। তখন স্বামীজি বললেন, ” আর মানুষ অনাহারে মরে গেলে তার মুখে অন্ন তুলে দেওয়া বুঝি আপনাদের ধর্ম নয়?”। তখন সভাপতি গিরধারী বললেন, ”কিন্তু শাস্ত্রে আছে গাভী তো আমাদের মাতা।” তখন বিবেকানন্দ ধমকের সুরে বললেন, ”গাভী যে আপনাদের মাতা তা বেশ বুঝতে পারছি। তা না হলে এমন সব ছেলে জন্মাবে কেন?”
_________________________
বঙ্কিমচন্দ্র
ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরির জন্য বঙ্কিমচন্দ্রকে ভাইভা দিতে হল। তাঁকেও যথারীতি বাংলার উপরে পরীক্ষা দিতে হল তবে সেখানে পরীক্ষক একজন জাত ইংরেজ। প্রথমেই তিনি বঙ্কিমকে প্রশ্ন করলেন, “ওয়েল! বলতে পারো, হোয়াট দ্য ডিফারেন্স বিটুইন বিপড অ্যান্ড আপড?” বঙ্কিম বাবু হেসে বলেছিলেন,” অবশ্যই, একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে বলছি। পদ্মায় একবার স্টিমারে করে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ শুরু হল ঝড়। সেটা হল বিপদ। আর এই যে আজ আমাকে একজন বাঙালি হয়ে তোমার মত ইংরেজের কাছে বাংলা ভাষার পরীক্ষা দিতে হচ্ছে- এটা আপদ।”
_________________________
শরৎচন্দ্র
শরৎবাবুর কাছে দুজন ব্যক্তি এসেছেন। তারা শরৎচন্দ্রের লেখার ভূয়সী প্রশংসা করলেন আর রবীন্দ্রনাথের লেখার সমালোচনা করলেন কারণ তা নাকি দুর্বোধ্য। তখন শরৎ বাবু বললেন, “আমি লিখি আপনাদের জন্য। আর রবিবাবু লেখেন আমাদের জন্য।"
_________________________
রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব
রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কাছে ধর্মসভায় হেরে গিয়ে এক সাধু রাগ করে বললেন, ” আমি ত্রিশ বছর সাধনা করে এখন হেঁটে নদী পার হতে পারি। আপনি কী পারেন?” তখন রামকৃষ্ণ একটু হেসে বললেন, ” যেখানে এক পয়সা দিলেই মাঝি আমাকে নদী পার করে দেয় সেখানে এর জন্য ত্রিশ বছর নষ্ট করার পক্ষপাতী আমি নই।”
No comments:
Post a Comment