Tuesday, 31 July 2018

ভদ্র বাঙালি

শুনেছি কানাডিয়ানরা নাকি সবথেকে বিনয়ী জাতি, মানে তাদের কথায় কথায় নাকি "সরি" বলার অভ্যেস, কাউকে দুঃখ দিয়ে বা Rudely কথা নাকি বলেননা কখনো, ওদিকে ব্রিটিশদের ইংলিশ শুনলে বুঝবেন যথেষ্ট বিনম্র তারাও, কথায় কথায় যেন বিনম্রতা ও ভদ্রতা ঝরে পরে,
কিন্তু এসব ব্যাপারে আমরা বাঙালিরাও কম কিসে ? আসুন দেখে যাক-
- বাঙালিরা মুখের উপর না বলতে পারে না
তারা বলে " আচ্ছা! দেখছি.."
- বাঙালিরা প্রচন্ড খারাপ থাকলে সেটি বলে না,
বাঙালি বলে "এইতো চলে যাচ্ছে" ।
- সামনে পথ আটকে থাকলে "সামনে থেকে সর বাল, রাস্তা কি তোর বাপের?" না বলে,
বাঙালি বলে "দাদা একটু দেখি" ।
- ওদিকে পেট পুরে সাটিয়ে যাচ্ছেন, সব গোগ্রাসে গিলছে, বাড়ির কত্তার ফাটছে, জ্বলছে, মনে মনে বিস্তর গালাগালি করলেও আপনাকে বলবে " দেখো লজ্জা করে খাবে না কিন্তু, নিজেদের মনে করে চেয়ে-চিন্তে খেয়ো বাপু, ওরে কে আছিস? এদিকে দুটো লেগপিস দে" ..
- বাড়িতে অতিথি এসেছে, ফেরার নাম নেই, বিরক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাও দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করলেন, যাওয়ার সময় কিন্তু দিব্যি হেসে বলেন "হেঁ হেঁ দাদা আবার এই গরিবের বাড়িতে আসবেন কিন্তু । এত জলদি যাওয়ার কি আছে? আরো দুটো দিন থেকে যেতে পারতেন... "
- বন্ধুর সাথে অনেক বছর পর দেখা, তাকে গালাগালি দিয়ে গুষ্টি উদ্ধার না করে হেসে বলেন,
"হ্যা! ভাই এখন আর আমাদের চিনবি কেন বল? বড় মানুষ হয়ে গেছিস" .. ।
- বাঙালিরা কোন ভিক্ষুক ভিক্ষা না দিলে/দিতে পারলে চুপচাপ এড়িয়ে যায় না .. বলে "মাফ করবেন" ।
- কোন বড় চাকরি পেলে বা এক্সামে ফাটিয়ে নম্বর পেলে বা অনেক টাকা ইনকাম করলে বাঙালি গর্ব করে না, স্মিত হেসে বলে " এ আর এমন কি?"
- বাঙালিরা বেরোনোর সময় যাই বলেনা, বলে "আসি" এতে শুনতে বিনম্র লাগে ও মাতৃদেবীর আশীর্বাদে বিপদমুক্ত থাকে ।
- ট্রেনে মারাত্মক ভিড়, পা ফেলার জায়গা নেই, কুনোই দ্বারা অবিরত গুঁতো খাওয়া লোকটি কিন্তু গালাগালি দেননা , বলেন না " এই শুয়োরের বাচ্চা সরে দাঁড়া" .. বরং বলেন " দাদা একটু সরে দাঁড়াবেন, সুবিধা হত আর কি" ..
- বারবার ডাকার পরেও সারা না দিলে বাঙালি বলে না " এই কানাদোচা শুনতে পাস না ওয়ারা? .. বাঙালি বলে " ওঁওঁওঁওঁওঁওঁওঁ দাদা শুনছেন?"
- -
এরকম হাজারো বাঙালির বিনম্রতার নিদর্শন দেওয়া যায়। রোজ রোজ রাস্তা-ঘাটে-বাজারে-হাটে-ট্রেনে-বাসে-ভিড়ে বাঙালি তার মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে আসছে, তাই বুক ঠুকে বলুন "আমি গর্বিত আমি বাঙালি" 😂✌️
আপনি কি এর মধ্যে কোনটা করেন? বা কোন বিনম্রতার কাজ করেন? কমেন্টে জানান ..
সবার জানা প্রয়োজন, কতটা উৎকৃষ্ট এই বাঙালি জাতি ।

Saturday, 28 July 2018

গান্ধী বধ

সুপ্রীম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয় মাননীয় নাথুরাম গোডসের ভাষন --- আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি
(পর্ব - 1) গুগল থেকে সংগৃহীত
-------------------------------------------------------------------------
সুপ্রীম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয় মাননীয় নাথুরাম গোডসের ভাষন --- আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি । 60 বছর এটা নিষেধ ছিল! আপনারা সকলেই জানেন --- 30 শে জানুয়ারী, 1948 গোডসে গুলি মেরে গান্ধীজীর হত্যা করেছিলেন। গুলি মেরে উনি ঘটনা স্হল থেকে পালিয়ে যান নি! উনি আত্মসমর্পণ করলেন! গোডসের সঙ্গে আরও 17 জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হল। মামলা চলাকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ করা হয় যাতে নাথুরাম গোডসে তাঁর বক্তব্য রাখতে পারেন। অনুমতি ত মিলল কিন্তু শর্ত সাপেক্ষ! সরকারের নির্দেশ অনুসারে কোর্টের বাইরে যাওয়া চলবে না। পরে ওনার ছোট ভাই গোপাল গোডসে দীর্ঘদিন মামলা চালানোর পর ---- প্রায় 60 বছর পর অনুমতি পাওয়া যায় সর্ব সমক্ষে রাখার।
1. নাথুরাম ভাবতেন --- গান্ধীজির অহিংসা ও মুসলিম তোষণ নীতি হিন্দুদের কাপুরুষে রূপান্তরিত করে দিচ্ছে। কানপুরে গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থীকে মুসলিমরা নির্মম ভাবে হত্যা করে। আর যে গণেশজী গান্ধীজির ভাব ধারায় প্রভাবিত ছিলেন ---- তাঁর হত্যাকান্ডে গান্ধীজি চুপ রইলেন!
2. 1919 এর জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকান্ডে সমস্ত আক্রোশে ফুঁসছিল। এই নৃশংস হত্যাকারী খলনায়ক জেনারেল ডায়ারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু পরিস্কার মানা করে দেন!
3. গান্ধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করে ভারতে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনলেন! নিজেকে কেবল মুসলিমদের হিতৈষী হিসাবে আভ-ভাবে বুঝিয়ে দিতেন। কেরালায় মোপলা মুসলিমরা 1500 হিন্দুকে হত্যা 2000 হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করল! গান্ধীজি বিরোধীতা পর্যন্ত করলেন না!
4. কংগ্রেসের ত্রিপুরা অধিবেশনে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস বিপুল সমর্থনে জয়লাভ করেন। কিন্তু গান্ধীর পছন্দের প্রার্থী ছিল সীতা রামাইয়া! সুভাষ চন্দ্র বোসকে পরে বাধ্য করা হয় ইস্তফা দেওয়ার জন্য।
5. 23 শে মার্চ, 1931 --- ভগৎ সিংকে ফাঁসী দেওয়া হয়। সারা দেশ এই ফাঁসী আটাকানোর জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করেন। গান্ধী ভগৎ সিং এর কার্যকলাপকে অনুচিত মনে করে এই অনুরোধ রাখেন নি!
6. গান্ধীজি কাশ্মীরের রাজা হরি সিংকে পদত্যাগ করতে বলেন --- কারণ কাশ্মীর মুসলিম বহুল রাজ্য! উনি হরি সিংকে কাশী গিয়ে প্রায়শ্চিত্য করতে বলেন! অথচ হায়দ্রাবাদের নিজামের ক্ষেত্রে চুপ। গান্ধীজির নীতি ধর্ম বিশেষে বদলাত। পরে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের সক্রিয়তায় হায়দ্রাবাদকে ভারতের সঙ্গে রাখা হয়।
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি !!
(পর্ব - 2)
------------------------------------------------------------------------
7. পাকিস্তানে হিন্দু নিধন জজ্ঞ চলছে তখন। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু হিন্দু ভারতে চলে আসে। অস্হায়ী ভাবে আশ্রয় নেয় দিল্লীর মসজিদে। মুসলিমরা এর জন্য বিরোধীতা শুরু করে। ভয়ঙ্কর শীতের রাতে মা-বোন-বালক-বৃদ্ধ সকলকে জোর করে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। নিরব রইলেন গান্ধী!
8. গান্ধী মন্দিরে কোরান পাঠ ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করলেন! এর বদলে কোন মসজিদে গীতা পাঠের ব্যবস্থা করতে পারলেন না! অসংখ্য হিন্দু, ব্রাহ্মণ এর প্রতিবাদ করেছিল ---- গান্ধী আমলই দিলেন না!
9. লাহোর কংগ্রেসে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের জয় হল, কিন্তু গান্ধী জেদ করে এই পদ নেহেরুকে দিলেন। নিজের ইচ্ছা সফল করানোতে উনি সিদ্ধ হস্ত ছিলেন। ধর্না, অনশন, রাগ, বাক্যালাপ বন্ধ করা ---- এই কলা গুলির সাহায্যে যখন তখন ব্লাকমেল করতেন। সিদ্ধান্তের ঠিক ভুলও বিচার করতেন না।
10. 14 ই জুন, 1947 দিল্লীতে অখিল ভারতীয় কংগ্রেস সমিতির বৈঠক ছিল। আলোচনার বিষয় ছিল ভারত বিভাজন। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেশ ভাগের প্রস্তাব গান্ধী সমর্থন করলেন। এই ইনিই একদিন বলেছিলেন ---- দেশ ভাগ করতে গেলে ওনার মৃত দেহের ওপর করতে হবে!
লাখ লাখ হিন্দু মারা গেলেও উনি চুপ থেকেছেন! মুসলিমদের কখনো শান্তি বজায় রাখার আদেশ দেন নি ---- যত আদেশ উপদেশ শুধু হিন্দুদের ওপর!
11. ধর্ম নিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে "মুসলিম তোষণ" এর জন্ম দেন গান্ধী। যখন হিন্দী ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার বিরোধীতা করল মুসলিমরা ---- স্বীকার করলেন গান্ধী!
অদ্ভুত এক সমাধান দিলেন --- "হিন্দুস্তানী" (হিন্দী ও' উর্দুর খিচরি)! বাদশাহ রাম, বেগম সীতা বলার চল শুরু হল!
12. কিছু মুসলমানের বিরোধীতায় মাথা নত করলেন আবার ---- "বন্দে মাতরম" কে জাতীয় সংগীত হতে দিলেন না!
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি !!
(পর্ব - 3)
----------------------------------------------------------------------
13. গান্ধীজি বেশ কয়েকবার ছত্রপতি শিবাজী, মহারাণা প্রতাপ, গুরু গোবিন্দ সিংহকে পথভ্রষ্ট দেশভক্ত বলেছেন! কিন্তু সেখানে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহকে "কায়দে আজম" বলে ডাকতেন! কি অদ্ভুত না!
14. 1931 এ জাতীয় কংগ্রেস স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা কেমন হবে তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি তৈরী করে। এই কমিটি সর্ব সম্মতিতে ঠিক করেন ---- গেরুয়া বস্ত্রের পতাকা হবে যার মাঝখানে চরখা থাকবে। কিন্তু গান্ধীজির জেদে সেটা তেরঙ্গা করতে হয়! সব ওনারই মর্জির ওপর নির্ভর করত!
15. যখন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের উদ্যোগে সোমনাথ মন্দিরের পুননির্মাণের প্রস্তাব সংসদে রাখা হয় ----- তখন উনি বিরোধীতা করলেন! এমনকি উনি মন্ত্রীমন্ডলেও ছিলেন না! কিন্তু অদ্ভুত ভাবে 13 ই জানুয়ারী, 1948 এ আমরণ অনশন শুরু করলেন --- যাতে সরকারী খরচে দিল্লীর মসজিদ তৈরী হয়! কেন এই দ্বিচারিতা? উনি হিন্দুকে হয়ত ভারতীয় ভাবতেনই না! আচ্ছা আদৌ হিন্দু ছিলেন ত?
16. গান্ধীজির মধ্যস্হায় ঠিক হয় ---- স্বাধীনতার পর ভারত পাকিস্তানকে 75 কোটি টাকা দেবে। 20 কোটি শুরুতেই দেওয়া হয়। বাকি ছিল 55 কোটি। কিন্তু 22 শে অক্টোবর, 1947 পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করে! পাকিস্তানের এই বিশ্বাস ঘাতকতার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমন্ডল সিদ্ধান্ত নেয় বাকী পয়সা আর পাকিস্তানকে দেওয়া হবে না। কিন্তু সেই বেঁকে বসলেন লাঠিধারী! শুরু করলেন আবার ব্লাকমেল --- আবার অনশন। শেষে সরকার বাকি 55 কোটি টাকাও বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানকে দিতে বাধ্য হল!
এইরকম জিন্নাহ ও' অন্ধ পাকিস্তান প্রীতি দেখে বলতে পারি উনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপিতা ছিলেন ---- ভারতের নয়। প্রতিটি মুহুর্তে পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলেছেন ---- সে পাকিস্তানের দাবী যতই অন্যায় হোক!
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি!!
(পর্ব 4 )
------------------------------------------------------------------------
আদালতে দেওয়া নাথুরাম গোডসের কিছু বয়ানের বঙ্গানুবাদ।
" আমি ওনাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। কিন্তু কোন দেশভক্তকে দেশ ভাগ ও' একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করার অনুমতি দিতে পারি না। আমি গান্ধীকে মারি নি ---- বধ করেছি --- বধ। গান্ধীজিকে বধ করা ছাড়া আমার কাছে আর কোন উপায় ছিল না। উনি আমার শত্রু ছিলেন না ---- কিন্তু ওনার সিদ্ধান্ত দেশের বিপদ ডেকে আনছিল। যখন কোন ব্যক্তির কাছে আর কোন রাস্তা থাকে না ---- তখন ঠিক কাজ করার জন্য ভুল রাস্তা নিতে হয়।
মুসলিম লীগ ও' পাকিস্তান নির্মাণে গান্ধীজির সমর্থনই আমাকে বিচলিত করেছে। পাকিস্তানকে 55 কোটি টাকা পাইয়ে দেবার জন্য গান্ধীজি অনশনে বসেন। পাকিস্তানে অত্যাচারের জন্য ভারতে চলে আসা হিন্দুদের দুর্দশা আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। গান্ধীজির মুসলিম লীগের কাছে মাথা নত করার জন্য অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র সম্ভব হয়নি। ছেলের পক্ষে মাকে টুকরো করে ভাগ করতে দেখা আমার অসহনীয় ছিল। নিজ দেশেই যেন বিদেশী হয়ে গেলাম।
মুসলিম লীগের সমস্ত অন্যায় আব্দার উনি মেনে চলছিলেন। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ---- ভারত মাতাকে পুনরায় টুকরো হওয়ার হাথ থেকে ও দুর্দশার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমাকে গান্ধীজির বধ করতেই হবে। আর সেইজন্যই আমি গান্ধীকে বধ করেছি।
আমি জানতাম এর জন্য আমার ফাঁসী হবে এবং আমি এর জন্য প্রস্তুত। আর এখানে যদি মাতৃভূমি রক্ষা করা অপরাধ হয় ----- তাহলে এরকম অপরাধ আমি বার বার করব ---- প্রত্যেক বার করব। আর যতক্ষণ না সিন্ধু নদী অখন্ড ভারতের মধ্যে না বাহিত হয় ---- আমার অস্থি ভাসিও না। আমার ফাঁসির সময় আমার এক হাতে কেশরীয় পতাকা ও' অন্য হাতে অখন্ড ভারতের মানচিত্র যেন থাকে। আমার ফাঁসিতে চড়ার আগে অখন্ড ভারত মাতার জয় বলতে চাই।
হে ভারত মাতা --- আমার খুব দুঃখ যে আমি কেবল এইটুকুই তোর সেবা করতে পেরেছি ।"

অবাক পৃথিবী

(১)
প্রখ্যাত এক নাস্তিকবীদ দুঘন্টা ধরে ভগবানের অস্তিত্বহীনতার ব্যাপারে বক্তৃতা দিয়ে মঞ্চ থেকে নেমে গাড়ির দিকে পা বাড়িয়েই ল্যাদলেদে গোবর মারিয়ে বলে উঠলেন "হে ভগবান" .. !
..
(২)
কলেজের প্রথম দিন, হুব্বা সিনিয়রটি জুনিয়রদের কড়াভাবে শাসিয়ে বলল " ফ্রেসার্স পর্যন্ত অনলি ফরমাল পরে আসবি, ভদ্রতা শিখতে হবে তো নাকি?".. সে চলন্ত ভিড় বাসে এক যুবতীকে শ্লীলতাহানি করার দায়ে এখন জেলে .. ।
..
(৩)
মফস্বলের ছোটখাটো নেতা আবার কলকাতায় মহাকরণে সরকারি চাকরি করেন, তিনি দেশের সামগ্রিক উন্নতির জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা বক্তৃতা দিয়ে সকালে বিনা টিকিটেই ট্রেনে অফিসপথে যাত্রা করলেন, বলাবাহুল্য এটাই তার রোজকার কীর্তি ।
..
(৪)
জরাজীর্ণ দরমার ঘর, বৃষ্টিতে জল টালি চুইয়ে চুঁইয়ে পড়ছে, দপদপ ল্যাম্পের জলন্ত শিখার পরে আবছা আলোতে ৭-৮ বছরের বাচ্চাটি সারাদিন পর গোগ্রাসে গিলছে, সমাজের "কাজের মাসি" আর তার মা আরো দুটি রুটি এগিয়ে দিয়ে বললেন,
-"এই নে বাবু, আর একটু নে"
-"তুমি খেয়েছ"?
- হুহ! খাবো না কেন? খেয়েছি তো!
মেঘলা গভীর কালো আকাশ অবাক হয়ে দেখলো ..
সেদিন.. রাতে কিন্তু মা শুধু জল খেয়ে ঘুমিয়েছিল ।
..
(৫)
একটি মেয়ের ধর্ষণ হলো, বিশাল হুই-হুস্থূল হলো, পেপার, প্ল্যাকার্ড, মৌন মিছিল, খবরের চ্যানেলে লাইভ টেলিক্যাস্ট, ঘণ্টাখানকে সঙ্গে বুদ্ধিজীবী সব হল ..
কিন্তু আদতে মেয়েটিকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হল, টোন-টিটকিরি, অপমান, লাঞ্ছনা তার নিত্যসঙ্গী হলো, ধর্ষকের কিছু বছর জেল হয়ে সরকারের তরফ থেকে সেলাই মেশিন দিয়ে ছাড় দেওয়া হলো .. আর মেয়েটি ? নাঃ
কোন বীর রাজপুত্র এগিয়ে এলোনা এক ধর্ষিতা রাজকন্যাকে পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চাপিয়ে নিয়ে যেতে ..
তার খবর আজকাল জানিনা .. !

Friday, 27 July 2018

ডেডিকেটেড

প্রথমবার দেখা করতে গেলে প্রেমিকের জন্য গিফট কেন নিতে হবে?
তার চেয়ে নিজের হাতে কিছু একটা রান্না করে নিয়ে গিয়ে,সেটা নিজের হাতে খাইয়ে দিলে সমস্যা কোথায়?
প্রেমিকার জন্য দামি টেডিবিয়ার কেনার কি দরকার?
তার চেয়ে নানা রঙের কাঁচের চুড়ি কিনে,সেটা নিজের হাতে পড়িয়ে দিয়ে,সেই চুড়ির শব্দ শোনাটা বেশি মজার হবে!
প্রত্যেক রাতে চ্যাটিং বা মোবাইলে কথা বলতে হবে কেন?
তার চেয়ে এক রাতে হুট করে মোবাইলটা অফ করে দিন।
সারাদিন কথা না বলে বিকালে ফোন করে-
"তোমার সাথে জরুরী কথা আছে,এক্ষুনি দেখা করো!" বলে দেখা করতে গিয়ে,তার হাতে দশ-বারো পেজের একটা প্রেমপত্র ধরিয়ে দিলেই হয়!
কয়েকদিন মোবাইলে কথাবার্তা বলা বাদ দিয়ে,জাষ্ট চিঠিতে সমস্ত আবেগ ঢেলে সেটা একে অপরকে পাঠান না!
মন্দ হবে না সিরিয়াসলি!
দুজন মিলে একটা টি-শার্ট কিনুন!
তারপর কয়েকদিন পরে,সেটা প্রিয় মানুষকে দিয়ে দিন!
সেটা গায়ে দিয়ে একটু পর পর 'ঘ্রান' নিতে খারাপ লাগবে না হয়তো!
সবসময় মোবাইলে প্রেমালাপ করতে হবে কেন?
তার চেয়ে একজন আরেকজনের টিচার হয়ে যান!
পরামর্শ দিন পরামর্শ নিন..!!

বাঙালির পদবী অনুযায়ী ধারণা

ঘোষ - ঘোষ মানেই দুধের ব্যবসা, বাড়িতে গরু পোষে ।
..
সাহা - সাহা মানেই কিপ্টের যম, প্রাণ বেরিয়ে গেলেও হাত থেকে টাকা বেরোবে না ।
..
মোদক - মোদক মানেই বাঙালি ভাবে তার মিষ্টির দোকান থাকবেই সাথে ভুঁড়ি ফ্রি 😂
..
পাল - পাল মানেই সে পাপোষ তালের রিলেটিভ ।
বা জীবিকা মৃৎশিল্পী ।
..
দাস - আজীবন দাসত্ব করে যায়, আগেকার দিনে ক্রীতদাস ছিল 😂
..
হাজরা - মারাত্মক রকমের প্রতিবাদী, সেই মাতঙ্গিনী হাজরার যুগ থেকে, কিছু হলে হাজরা করে ঝাঁঝরা ।
..
দত্ত - ট্যালেন্টেড হয়, আজীবন দত্ত-গর্ত নিয়ে বন্ধুদের খিল্লির শিকার হয় ।
..
কুন্ডু - এরাও সাহাদের পরে কিপ্টেমিতে স্থান, কুন্ডু এর সাথে মুন্ডু মিলিয়ে কবিতা শুনতে অভ্যস্ত ।
..
মন্ডল - এমন কোন মন্ডল নেই যে এই ছন্দ শোনেনি -
"মন্ডল করে শুধু গন্ডগোল" .. জীবিকা চাষা ।
..
দে - দে মানেই হাভাতে , চাওয়া ছাড়া কাজ নেই, বাঙালি ভাবে এদের পূর্ববঙ্গের ভোলায় বাড়ি ছিল । দুর্বোধ্য বাংলায় কথা বলে..
..
সরকার - সরকার মানেই এই কবিতাটা ,
"সরকার -
গাছ থেকে পরে গেলে ওষুধের দরকার,
ওষুধ নাই ঘরে,
টাকা চুরি করে,
সাতদিন পরে,
জেল খেটে মরে" ..
..
ভট্টাচার্য্য/চক্রবর্তী -
এই দুটো পদবী মানে সে পুরুত মশাই 😂
..
বড়ুয়া - নেপালি, বৌদ্ধ , রাতে পাহারাদারি করে ।
..
বর্মন - বিদেশি, বর্মা থেকে আগত, এখন এখানে বসবাস করে, ভারিক্কি টাইপের হয় ।
..
অধিকারী - Over- possessive ও প্রতিবাদী টাইপের হয়, ফেবু আন্দলনের অন্যতম কান্ডারি ।
..
বসু/বোস - নিজেদের নেতাজির বংশধর বলে দাবি করে, বেশিরভাগ চাকরিজীবী হয় ।
..
মজুমদার - সাদা মাটা বাঙালি, লীলা মজুমদারকে নিয়ে গর্ব বোধ করে ।
..
বিশ্বাস - এদের বিশ্বাস করাই সবথেকে কঠিন 😂
..
রায় - রায় মানেই বাঙালি বোঝে খুব ট্যালেন্টেড লোকজন । 😂😂
যেমন - সত্যজিৎ রায়, সুকুমার রায় ।
..
পোদ্দার - বাঙালি ভাবে এরা "পোদ্দারী" করতে ওস্তাদ 😂
এরা পদবী শুনলে লোকের মুখে হাসি ফোটে ।
..
সেন - বাঙালি ভাবে এদের অনেক টাকা, আর ফিরকি ওড়াতেও ভালোবাসে 😂
- গৌরী সেন এদের বদনাম করেছে ।
..
গোস্বামী / ভরদ্বাজ - গোস্বামী বা ভরদ্বাজ মানেই বাঙালির কাছে সাধক । পূজা-অর্চনা নিয়ে থাকে ।
..
বণিক - মানেই বাঙালি ভাবে ব্যবসায়ী ।
..
দেবনাথ - সাধারণত ব্যবসায়ী, কিপ্টে টাইপের লোকজন ( সাহা ও কুন্ডুর পরে স্থান)
..
গুপ্ত - মারাত্মক রকমের Introvert 😂 গুপ্ত রোগের শিকার।
..
সুর - গান গায়, বিলুপ্ত প্রজাতির জীব, হাতি নয় তবে সুর আছে ।
..
কর - কাজের নামে অষ্টরম্ভা , অন্যকে শুধু অর্ডার মারে ।
..
পান্ডে/সিনহা/সিং/শর্মা- বাঙালি হলেও কেউ বাঙালি ভাবে না 😂
..
চৌধুরী/মন্ডল /খান - বাঙালি সারাক্ষন Confused ব্যক্তিটি হিন্দু না মুসলমান, সবথেকে Confusing পদবী ।
..
পাত্র - সারাক্ষন বিয়ের ধান্দা
..
গাঙ্গুলি - গাঙ্গুলি মানেই দাদার বংশধর, এরা গর্ববোধও করে ।
..
মুখার্জি/চ্যাটার্জি - ব্রাহ্মণ তাই ঘ্যাম বেশি 😂
..
মাইতি/মাহাতো - মাইতি বা মাহাতো মানেই বাঙালি ভাবে মেদিনীপুরে বাস 😂
..
ঠাকুর - এরা নিজেদের রবিঠাকুরের বংশধর ভাবে, লেখালিখি করে, অনেকের আবার হাতও থাকে না, গব্বর কেটে নিয়ে গেছে ।
..
হালদার/হাওলাদার - মানেই বাঙালি ভাবে SC, এরা ব্যবসা করে ।
ব্যানার্জি - থাক আর নাই বা বললাম.. জয় মা মাটি মানুষ 😂
..
ঘোষাল - ভালো গান গায়, নিজেদের শ্রেয়া ঘোষালের বংশধর বলে দাবি করে ।
..
দেব - পাগলু ড্যান্স ড্যান্স ড্যান্স 😂😂
..
গুহ - মেয়েবাজ হয়, সারাজিবন গুহার খোঁজে জীবন কাটায় 😂
..
কর্মকার - এদের সোনার বা দশকর্মার দোকান আছে ।
..
হোর - ইংলিশে ভাবলেই এরা তোমায় ধুয়ে দেবে 😂
..
মিত্র/বক্সি - শখের গোয়েন্দা কিন্তু বাস্তবতা হুমরে পরায় চাকরি খোঁজে 😂
..
মান্না - রান্নায় সিদ্ধহস্ত
..
বৈরাগী - বাউল গান গায় ।
..
নন্দী - ভৃঙ্গির সহোদর, মাল খেয়ে পরে থাকে ।
..
সাধু/সাধু খাঁ - ভন্ড লোকজন হয় , বুজরুকি পছন্দ করে ।
..
জোয়ারদার - জোয়ারের জন্যে চাঁদ কম এরা বেশি দায়ী ।
..
স্যন্যাল - পাঁজি দেখা ব্রাহ্মণ 😂
..
নস্কর - এদের বোঝা দুষ্কর !
..
শীল - চুপিচুপি লোকের চালে মারে ঢিল ..
..
ভৌমিক - কুকুরপ্রেমী, ঝামেলা লাগলে ভৌ ভৌ করতে সবার সেরা ।
..
মল্লিক - সপাত সপাত ! মানুষজনকে চাবকাতে ভালোবাসে 😂
..
সামন্ত - সাধারণত BSF হয়, সামন্তদের সীমান্তে দাঁড়াতে ভালো লাগে ।
..
বসাক - বসে বসে দিন কেটে যায়, ব্যাটারা ল্যাদখোর .. ..
..
ভান্ডারী - জ্ঞানের ভান্ডার,গুলবাজ ।
..
নায়েক - একটুর জন্যে .. নায়ক হতে পারেনি ।
..
মালিক - এরা আদতেও মালিক হয় না, বাস্তব জীবনে এদের হাঁড়ি ফুটো ।
..
ধর - লাজুক প্ৰকৃতির হয়, ধর ধর করলেও ধরতে পারে না ।
..
চন্দ্র - চাঁদপানা মুখ, কিন্তু মনে বড় দুখ 😣
..
সর্দার - একসময় ডাকাতি করত, এখন ব্যবসায় মন্দ বলে ব্যবসা করে, খেলাধুলায় ভালো ।
..
সিংহ - ধুস! এরা আবার মানুষ নাকি?
..
পাঁজা - পাঁজারা গাঁজা খায় ।
..
খাঁড়া - জাপানি তেলের কারবারি ।
..

Friday, 20 July 2018

আদরের সাপ

এক ভদ্রমহিলা একটা অজগর সাপ পুষতো। সাপটাও মহিলাকে অসম্ভব ভালোবাসতো। অজগরটা লম্বা ৪ মিটার এবং দেখতে ও বেশ স্বাস্হ্যবান ছিলো । একদিন হঠাৎ করে মহিলার আদরের সাপটি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিলো। কয়েকসপ্তাহ চলে গেলো কিন্তু সাপটি কিছুই খায় না। আদরের সাপের এমন অবস্থায় মহিলায় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো এবং উপায় বুদ্ধ না পেয়ে অবশেষে সাপটাকে ডাক্তারে কাছে নিয়ে গেলো
ডাক্তার সাহেব মনযোগ দিয়ে সব শুনলেন
এবং মহিলাকে ডাক্তার প্রশ্ন করলেন সাপটা কি রাতে আপনার সাথে ঘুমায়।
মহিলা উত্তর দিলেন হ্যাঁ। ডাক্তার আবার মহিলা কে প্রশ্ন করলেন ঘুমানোর সময় সাপটা আস্তে আস্তে আপনাকে চারপাশে জড়িয়ে ধরে? মহিলা বিস্মিত হলেন এবং জবাব দিলেন হ্যাঁ। এইবার চিকিৎসক খুবই ভয়ানক এবং অপ্রত্যাশিত কিছু বললেন। ডাক্তার বললেন ম্যাডাম সাপটি জড়িয়ে ধরে আপনাকে চারপাশ থেকে মুড়িয়ে ধরে কারণ আপনার মাপ নিচ্ছে এবং নিজেকে প্রস্তুত করছে কিভাবে আপনাকে আক্রমন করা যায়। সাপটি এ জন্য খাওয়া দাওয়া বন্ধ করেছে যথেষ্ট জায়গা খালি করতে যাতে আপনাকে হজম করতে পারে।
এই গল্পে একটা মোরাল আছে
বিঃদ্রঃ- আপনার চারপাশে হয়তো এমন অনেকেই আছে যাদের আপনি কাছের মানুষ ভাবেন যাদের দেখে মনে হয় আপনাকে তারা অসম্ভব ভালবাসে। হয়তো আপনার ক্ষতিই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য।

Sunday, 15 July 2018

ডার্ক চকোলেট

ঠিক এই মুহুর্তে কলকাতার এক শপিং মলের বাইরে দাঁড়িয়ে অভিমানী প্রেমিকার হাতে চকোলেটের গিফট প্যাক তুলে দিচ্ছে দেরি করে আসা প্রেমিক... ঠিক এই মুহুর্তে দিল্লীর এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাটে সিঙ্গেল মল্টের সাথে ডার্ক চকোলেট আর তন্দুরি চিকেন সহযোগে পার্টি চলছে... ঠিক এই মুহুর্তে আপনার কন্যাটির মুখে হাসি ফুটেছে সারাদিন পরে... মুখে লেগে আছে কোকোর গন্ধ.... ঠিক এই মুহুর্তে অ্যালি পালাচ্ছে.....চকোলেট ছেড়ে... চকোলেটের গন্ধে বমি পায় তার!
এই পর্যন্ত পড়ে যারা ভাবছেন আমি একটা থ্রিলার লিখছি, অপেক্ষা করছেন একটা চেজ অ্যান্ড রান সাস্পেন্স এর, তারা বরং টিভি খুলে ক্যাডবেরির অ্যাডে মন দিন.... ' সাত সমুন্দর পারকে ম্যায় তেরি পিছে পিছে...'। বাকিরা আমার সাথে চলুন সাত সমুন্দর পেড়িয়ে এক অন্ধকার সফরে। যার পরতে পরতে লুকিয়ে আছে ডার্ক চকোলেট... অন্ধকার। এতটাই যেখানে নিশ্বাস নেওয়াও বারণ...
না, অ্যালি পালাতে পারবে না। যেমন পারবে না ১.৮ মিলিয়ন আফ্রিকান শিশু যারা তাদের শৈশব র‍্যাপিং পেপারে মুড়ে ঢেলে দিচ্ছে আমার আপনার সন্তানের মুখে। আইভরি কোস্ট আর ঘানা। পশ্চিম আফ্রিকার এই দুটো দেশে পৃথিবীর মোট কোকোর ৭০% চাষ করা হয়। কালো মানুষ, কালো মাটি, কালো চকোলেট। কিন্তু অ্যালি কে? কোথা থেকে পালাচ্ছে সে? আসুন, ওর সাথে পরিচয় করা যাক।
অ্যালির বাড়ি মালিতে। পৃথিবীর সবথেকে পিছিয়ে পরা দশটি দেশের মধ্যে একটি। এক মাথা কোঁকড়া কোঁকড়া চুল, মায়াবী চোখ। রাত্রে আগুনের পাশে বসে বুড়োবাবা মানে অ্যালির ঠাকুর্দা গল্প বলত। এক দৈত্যের গল্প। যে উত্তরের জঙ্গলে থাকে। বাচ্চা দেখলে তার রক্ত চুষে পুতুল বানিয়ে দেয়। ছোট্ট অ্যালি ভয় পেত। একদিন সেই দৈত্য ওকে ধরে নিয়ে গেল সামান্য ৮০ ডলারের বিনিময়ে। তখন ওর বয়স ৫। চমকে যাবেন না বন্ধুরা। শুধু একবার তাকিয়ে দেখুন আপনার শিশুটির দিকে। যাইহোক...
প্রতিদিন হাজার হাজার বাচ্চা পাচার হয়ে যায় মালি, বুরকিনা ফাসো এইসব প্রতিবেশী দেশ থেকে ঘানা, আইভরির কোকো ফার্মগুলোতে। স্কুল, কাজ, ডলারের লোভ দেখিয়ে বা রাস্তা থেকে তুলে আনা হয় বাচ্চাদের। সকাল ছটা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত অমানুষিক পরিশ্রম করানো হয়। খাদ্য বলতে সস্তার ভুট্টা সেদ্ধ আর কলা। রাত্রে জানোয়ারের মত জানলা দরজা হীন কাঠের আস্তাবলে ফেলে রাখা হয়। কখনো শিকল দিয়ে বেঁধে। তার মধ্যে যারা পালানোর চেষ্টা করে তাদের ভাগ্যে থাকে বেধরক মার। মার খেয়ে বা ধর্ষণে মরে গেলে নদীতে বা কুকুরের মুখে ছুঁড়ে দেওয়া হয় শরীর।
ভয় লাগছে? ঘেন্না লাগছে? আপনার শিশুটির মুখে লেগে থাকা চকোলেটের খয়েরী দাগের দিকে তাকাচ্ছেন? তাহলে আর পড়বেন না। কারণ ইন্টারন্যাশনাল লেবার ল এখানে অকেজো। মায়া, ভালোবাসা নেই এখানে। আছে নৃশংসতা, আছে রক্ত। যা শুকিয়ে কালো হয়ে আছে আপনার ফ্রিজে রাখা চকোলেটে...
বিশ্ববিখ্যাত চকোলেট কোম্পানিগুলো যেমন নেসলে, হার্সেস, মার্স এখান থেকে কোকো কেনে। প্রতিযোগিতার বাজারে কোকোর দাম কম রাখার জন্যই শিশু শ্রমিক দরকার। কারণ ৫-১২ বছর বয়সীরা মজুরী পায় না। তার ওপরে তারা কোকো ফিল্ডের দুর্গম জায়গায় যেতে পারে, যেখানে একটু বড়রা ঢুকতে পারবে না। হ্যা, পোকা, সাপ আর বিছের কামড়ে বেশ কিছু বাচ্চা মারা যায়, কিন্তু তাতে মালিকদের কিছু যায় আসে না। দারিদ্র‍্য থাকবে, বাচ্চার যোগানও থাকবে। বড় কোম্পানিগুলো চুপ করে থাকবে সস্তায় কোকো পাওয়ার জন্য। আমরাও মজে থাকবো বিদেশী চকোলেটের স্বাদে.... চিয়ার্স!
কোকো ফার্মের শিশু শ্রমিকদের ৪০% মেয়ে। তাদের বয়সন্ধি আসে, যৌবন আসে এই কোকো বাগানেই। এদের অধিকাংশই সারা জীবনে তাদের পরিবারের সাথে দেখা করতে পারে না। কারণ এখানে আসা সোজা, বেরোনো কঠিন না, অসম্ভব। মালিক, ঠিকাদার, সুপারভাইজার, পুলিশ এমনকি মজুরদের যৌনতৃপ্তি মেটায় মেয়েরা। ১১ বছরে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। পাল্লা দিয়ে বাড়ে যৌনরোগ। পচে, গলে যায় শৈশব। স্বপ্নে পোকা আসে, বিষাক্ত ভয়ংকর সব পোকা। খুবলে খায় হৃদয়... চকোলেটি হৃদয়!
কাজের নমুনা? দুর্বল হৃদয়রা পড়বেন না। স্কিপ করে যান। মেছেটে হল এমন একটি ছুরি যা চালালে একটা শিশুকে কিমা বানিয়ে দেওয়া যায় কয়েক মিনিটে। বাচ্চাদের কে মেছেটে ধরিয়ে দেওয়া হয় কোকো বিন পেড়ে সেটাকে বস্তায় পুড়ে ঝাড়াই বাছাই করার জন্য। কারোর আঙুল কাটা যায়, কারোর গায়ে গভীর ক্ষত। ১০ বছরের বাচ্চাকে পিঠে ১০০ কেজির বস্তা নিয়ে চলতে হয়। একটু বিশ্রামের জন্য চাবুকের বাড়ি পড়ে
কি ভাবছেন? মধ্যযুগ? না স্যার। এই ফেসবুকের যুগেই এই ক্রীতদাস প্রথা চলছে এবং এই অন্ধকার থেকেই বেরোচ্ছে আমার আপনার প্রিয় ডার্ক চকোলেট...
আমি জানিনা এখনো অ্যালি পালাতে পেরেছিল কিনা! কিন্তু বিশ্বাস রাখি, অ্যালি একদিন পালাতে পারবে। পালিয়ে যাবে অনেক দূর। এবেদি পেলের মত ফুটবলার হবে। শুধু ও না, শেকল খুলে যাবে ওর মত লাখ লাখ বন্দী প্রজাপতির...
হ্যা, একটা কথা বলা হয়নি। অ্যালি চকোলেট খায়নি কোনোদিন। স্বাদ জানে না। সান্তা আসেনা কখনো।

Popular Posts