Thursday, 10 May 2018

ভাগাড়

আফ্রিকার মাসাইমারা প্রান্তরে এক বাঙালি নায়ক শুটিং করছেন।হঠাৎ ঘাস ঝোপের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এলো বিশাল সিংহ। বাকি শিল্পীরা অনেক দূরে। কিংকর্তব্যবিমুঢ় তারা।অসহায় নায়ককে খেতে উদ্যত সিংহ। নায়ক করুন গলায় সহশিল্পীদের চেঁচিয়ে বললেন,"কলকাতায় খবরটা দিয়ে দিস। আমি আর নেই।" সিংহ দাঁড়িয়ে গেলো। "ব্যাটা ভাগাড়ের মাংস খাস। ইসস আরেকটু হলেই জাত গেছিলো তোকে খেয়ে। ভাগ এখান থেকে।" ফিরে গেলো সিংহ। নায়ক হাত জোড় করে বললেন জয় ভাগাড়ের জয়।
এতদিন শুনেছিলাম মানুষেরা অভিশাপ দেয়, তুই মরলে কুকুরে শেয়ালে খাবে। সেদিন দেখি কুকুরেরা ঝগড়া করছে, "মরবি মরবি, মরলে তোকে মানুষে খাবে।"
এক ব্রাহ্মন কাঁধে পাঁঠা নিয়ে যাচ্ছিলো। তিন ঠগ প্ল্যান করে আলাদা আলাদা করে ব্রাহ্মনকে বললেন কুকুর নিয়ে চললেন কোথায়। বেচারা ব্রাহ্মন পাঁঠায় গোলমাল আছে ভেবে তাকে ছেড়ে দিলো। তিন ঠগ সেই পাঁঠা দিয়ে ভোজ লাগালো। এই গল্প সবার জানা। এখন যুগ পাল্টেছে। ঠগের বংশধররা আজো ঠকায়। সেদিন পাঁঠাকে কুকুর বলে চালিয়েছিল। এখন কুকুরকে পাঁঠা বলে চালায়।
কেভিন কার্টারের একটি বিখ্যাত ছবি সবাই দেখেছি। একটি দুর্ভিক্ষ পীড়িত শিশু। তার দিকে লোলুপ চোখে চেয়ে আছে এক শকুন। মৃত্যুর অপেক্ষায়। আলোড়ন ফেলেছিল সে ছবি। আরেকটি ছবি শোরগোল ফেলেছে সারা বিশ্বে। একটি দুর্ভিক্ষ পীড়িত শকুন মৃতপ্রায়। তার দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে চেয়ে আছে এক মানুষ। নামী রেস্তোরাঁর সাপ্লায়ার। শকুন মরলেই তা দিয়ে টার্কির রোস্ট হবে। অনেক দামে বিকোবে মালটা।
পরিবেশ দপ্তর স্বচ্ছ ভারতের অবদানের পুরস্কার ঘোষণা করতে চলেছে। নাম ঘোষণা হোল কলকাতার দুই মাংস বিক্রেতার। ভাগাড় থেকে এতো পরিমান মৃত প্রানী তারা সাফ করেছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।
এক বিরিয়ানির দোকানে বোর্ড ঝোলানো ছিল "নো বিফ"। কে যেন তার নিচে লিখে দিয়েছে অনলি ডগ, ক্যাট, ফক্স, র‍্যাট।
এ সবই কাল্পনিক। কিন্তু যে দেশে এসি রেস্তোরাঁয় বসে দামের সাথে ১৮% জিএসটি দিয়ে ভাগাড়ের মাংস খেতে হয়, সে দেশে সবই বাস্তব।

No comments:

Post a Comment

Popular Posts