Monday 1 October 2018

ভাগ্যবতী

সল্টলেক সেক্টর ফাইভের অফিস পাড়া,
খুব ব্যস্ত চারদিক..।
দুপুর ২.৩০ হবে.. রাস্তার পাশের চেনা দোকানে চা খাচ্ছি..
একটি মেয়ে, ২৩ কি ২৪ হবে বয়স..
দোকানে ইতস্তত করতে করতে ঢুকলো..
হাতে একটা transparent ফাইল..
ভিতরে কিছু মার্কশিট,সার্টিফিকেট এসব রয়েছে দেখা যাচ্ছে...
সারা শরীরে প্রসাধনের বিন্দুমাত্র চিহ্ন না
থাকলেও ঘাম আর রোদ মাখা মুখটা বেশ সপ্রতিভ...
দোকানদারের সাথে কিছু কথোপকথনের ছিটেফোঁটা..
মেয়ে- দাদা, এখানে ভাত বা রুটি কিছু পাওয়া যায়?
দোকানী- হ্যাঁ, ভাত পাবেন, বলুন কি খাবেন? ডিম,রুই মাছ,পাবদা মাছ,চারা পোনা, মাছের ডিম, মাংস?
মেয়ে- এমনি শুধু সব্জি ভাত কত দাদা?
দোকানী - ভাত,ডাল, সোয়াবিনের তরকারি, আলুভাজা.. ৩৫ টাকা।
মেয়ে - আমার সোয়াবিন চাই না, আমায় শুধু আলুভাজা আর ডাল দিন..
৩০ টাকায় হয়ে যাবে তো?
দোকানী - আচ্ছা বোন বোসো দিচ্ছি...
এরপর একটা ফোন আসে..
মেয়ে -
" হ্যাঁ মা বলো......
.......…...... হ্যাঁ...............হ্যাঁ ইন্টারভিউ দিয়েছি..... হ্যাঁ আরও কয়েকটা অফিসে যাব কথা বলতে,.................................
.......... হ্যাঁ খেয়েছি......ভাত মাছ.... তুমি ওষুধ গুলো খেয়েছ?..... হ্যা আমি ৫ টার ট্রেনটা ধরবো... আচ্ছা ভাইকে টিউশান থেকে ফেরার সময় স্টেশনে দাঁড়াতে বলবে......আচ্ছা রাখো...হুম..।"
ফোনটা রেখে কয়েকটা সেকেন্ড বাইরের দিকে আনমনে হয়ে তাকিয়ে ছিলো..... হয়তো অসুস্থ মা.. পড়ুয়া ছোট ভাইয়ের সুদিন এনে দেওয়ার সাজানো দিনের ছবি গুলো চোখে ভিড় করেছিলো...
কিরকম যেন একটা শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা এলো... একটা অজানা অচেনা মেয়ের জন্য..
কি যেন বলে এই বয়স টাকে... বালিকার চেয়ে বড়ো.. যুবতীর চেয়ে ছোট।
নারী স্বাধীনতার কি??
ওর কাছ থেকে একবার শুনতে খুব ইচ্ছে করছিলো....
একটা মনে মনে শুভকামনা জানালাম..
এই চাকরির আকালের যুগে তুমি যে বাইরে এসে আগুন রোদের তলায়.. শক্ত মাটিতে নেমে এসেছ যুদ্ধের জন্য,
এখানেই তুমি যুদ্ধটা অর্ধেক জিতেছো..
আর অর্ধেক নিজের চাকরির টাকায় সত্যি সত্যি মাছ ভাত খাওয়ার পর জিতবে....
এ পর্যন্ত ঘটনাটা হয়তো সাধারন ছিলো..
যদিও "মেয়ে" তুমি মন জিতে নিলে..
কিন্তু ঘটনাটা আরও বাকী..
দোকানী..ভাতের থালাটা সাজিয়ে..
মেয়েটির সামনে রেখে বললো..
দোকানী -
বোন আমি ভুল করে সোয়াবিনটা দিয়ে ফেলেছি, তুমি খেয়ে নাও প্লিজ.........
ওই তিরিশ টাকাই দিও।
মেয়ে -কিন্তু আমি তো শুধু আলুইভাজাই....
দোকানী -
আমি একদম ভুলে তরকারিটা দিয়ে ফেলেছি.. তুমি প্লিজ খেয়ে নাও.. তিরিশ টাকায় নেবো আমি...আমার ভুল..
তুমি না খেলে এতোটা খাবার নষ্ট হবে আমার..
আপনাদের মতো আমিও ভেবেছিলাম নিছকই ভুল...
কিন্তু চেনা দোকানী.. কানের কাছে এসে বললো..
"শুধু ব্যাবসায় লাভ খুঁজলে হবে দাদা... এরকম ভুল গুলো করার সুযোগ ও খুঁজতে হবে... ওর খুব খিদে পেয়েছে..
বনগাঁ তে আমারও বোনটার বয়স এরকমই..."
বলে আবার নির্লিপ্ত মুখে.
চা.. সিগারেটে, ভাত, তরকারির রাজ্যে হারিয়ে যায়।
আমি খুঁজে পেলাম না... কার জন্য বেশী
ভালো লাগা উচিৎ..
হয়তো একটা লাইন লেখা যেতে পারে..
যে যুদ্ধ জিনিসটা বোঝে, সে ই যোদ্ধার রক্ত, ঘাম, ক্ষিদের মূল্য দিতে জানে.....
আরেকটা কথা...
বনগাঁর বোনকে সল্টলেকে দিব্যি অচেনা একজনের মধ্যে খুঁজে আপ্যায়ন করে নেয় যার দাদা..
সেই বোন খুব ভাগ্যবতী...

Friday 7 September 2018

অসুর বধ

কলিযুগে যদি মহিষাসুরমর্দিনী জন্মাতেন তাহলে অত কষ্ট করে, যুদ্ধ করে, রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে আমাদের মা দুর্গা ভিলেনেশ্বর মহিষাসুরকে বধ করতেন না, বাঙালির রক্তে ল্যাদ তো আছেই ..তাই না? । তার কাছে অনেক সহজ উপায় ছিল ..অনেক মডার্ন পন্থা অনুসরণ করতেন ..
এই যেমন ধরুন ..ব্যাটাকে একটু হাত-পা বেঁধে কানে হেডফোন গুঁজে টোস্ট বিস্কুট খাওয়াতে খাওয়াতে রুমা ঘোষের গান বা দিদির হিন্দি/ইংলিশ বক্তৃতা শুনিয়ে দিতেন ..পুরো টোটাল "গ্রাভিটি অফ দি পরিস্থিতি" হয়ে যেত, যদিও ভাটশ্রী বিপ্লব দেবের বাণী একই কাজ দিত বা সন্ধ্যাবেলায় টিভির সামনে বসিয়ে এক কাপ চা দিয়ে হালকা করে "সাত ভাই চম্পা" দেখিয়ে দিতেন বা দেবের পাগলু ২ বা পাথরম্যানের গ্যাংস্টার .. ব্যস কেল্লা ফতে ।
আরো অনেক সহজ উপায় ছিল ..পশ্চিমবঙ্গে জেনারেল ক্যাটাগরিতে জন্ম করিয়ে দিতেন ঋষিবরকে Sms করে,ব্যস! ব্যাটা পাষন্ড চাকরি খুঁজতে খুঁজতে বেকারত্বের জ্বালায় মরে যেত বা বাংলা যেকোন বোর্ড KU,SU,CU, VU তে কোনকিছু অনার্স নিয়ে ভর্তি করালেও আশানুরুপ ফল পাওয়া যেত ।
বা ধরুন ভুলিয়ে-ভালিয়ে কলকাতায় ঘুরতে নিয়ে আসতেন, কোন ব্রিজের তলায় রেখে পালিয়ে যেতেন, ব্যস! নিমিষে কেল্লাফতে! রেস্তোরাঁর মাংস খাওয়ালেও ব্যাটা পেটে গলযোগ বাধিয়ে নির্ঘাত মরত!
আবার ধরুন ব্যাটাকে শিক্ষিত করার মন্ত্র নিতেন,কোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করে দিতেন, মেসে থাকত আবার স্টুডেন্ট অসুর.. যেই মেসের খাবার মুখে তুলেছে.. ব্যস ছবি!
তারপরে ধরুন একটু ফুসলে-ফাসলে coc এর নেশা ধরাতেন, ব্যাটা অসুর খেটে-খুঁটে Th10 বানাত, একদিন সুযোগ বুঝে গুগলে ব্যাইন্ডিং না করিয়েই তা ঝপ করে ডিলিট করে দিতেন ..ব্যস! অসুর ব্যাটা শেষে ডিপ্রেশনে ভুগে ভুগে মোমো খেলে দশতলা ঝাঁপ দিয়ে মরত ।
তবে হ্যাঁ! সবথেকে সহজ উপায় হয়তো এটাই নিতেন .. অসুরকে মানুষ করে তুলতেন, ভদ্র-সভ্য-পুরো ঝিকঝাঁক .. তারপরে অসুরকে ভালোবাসতে শেখাতেন ..ব্যস! হ্যা! মশাই ..সত্যিকারের ভালোবাসা!
অসুর তারপর থেকে রোজ রোজ বধ হত ..

তোমার বাবা মা কী করেন?

ছোট্ট বাবুর ক্লাসে নতুন শিক্ষিকা মিস মিলি এসেছেন। তিনি প্রথমেই সকলের সঙ্গে পরিচিত হবেন। কাজেই বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে বললেন, ‘ছোট্ট সুজি, তোমার বাবা মা কী করেন?’

‘আমার বাবা একজন বিজ্ঞানী, আর মা একজন ডাক্তার।’

মিষ্টি হেসে মিস মিলি বললেন, ‘ছোট্ট টুনি, তোমার বাবা মা কী করেন?’

‘আমার বাবা একজন শিক্ষক, আর মা একজন উকিল।’

‘বাহ! ছোট্ট বাবু, তোমার বাবা মা কী করেন?’

বাবু বলল, ‘আমার বাবা মারা গেছেন, আর মা একজন পতিতা।’

মিস মিলি রেগে আগুন হয়ে প্রিন্সিপালের কাছে পাঠালেন বাবুকে। মিনিট পাঁচেক পর ছোট্ট বাবু ফিরে এল।

‘তুমি প্রিন্সিপালকে বলেছ, তুমি আমার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছ?’

‘জ্বি মিস।’ বলল বাবু।

‘তিনি কী বললেন?’

‘বললেন, আমাদের সমাজে কোনও কাজই তুচ্ছ নয়। তারপর আমাকে একটা আপেল খেতে দিলেন, আর বাসার ফোন নাম্বার লিখে রাখলেন।’

মৌমাছিরাও ওগুলোই করে

রাতে শোওয়ার আগে স্ত্রীর মনে পড়ল আজ বিকেলে ছেলেকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে পাশের বাড়ির টুনির সঙ্গে কী যেন ফিসফিস করতে দেখেছেন।

তিনি স্বামীকে ডেকে বললেন, ‘হ্যা গো শুনছ, আমাদের ছেলে বড় হচ্ছে। তোমার কি মনে হয় না ওকে কিছু ব্যাপার বুঝিয়ে বলা উচিত? তুমি বরং আজকেই ওকে সেক্সের ব্যাপারে সবকিছু বুঝিয়ে বল। তবে একবারেই সব বলে দিও না যেন, ফুল কিংবা মৌমাছি থেকে শুরু কর।’

অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বামী বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। ছেলেকে আড়ালে ডেকে নিয়ে গেল। ‘হ্যা রে বাবু, তোর কি মনে আছে, গত হপ্তায় টুনির সঙ্গে তুই আর আমি কী করেছিলাম?’

‘হ্যাঁ বাবা।’

‘মৌমাছিরাও ওগুলোই করে।’

ভাবীর হাতের রান্না তো অপূর্ব

বাবুর অফিসের কাজে মন বসে না। তার গা ম্যাজম্যাজ করে, মেজাজটাও খারাপ হয়ে থাকে।

বস একদিন ডাকলেন তাকে।

‘শোনো, এভাবে তো চলবে না। তোমাকে চাঙা হতে হবে। আমারও এরকম হতো আগে। তখন কী করতাম জানো? লাঞ্চ আওয়ারে বাড়ি চলে যেতাম। তোমার ভাবীর হাতের মজার রান্না খেয়ে, ঘন্টাখানেক তাকে চুটিয়ে আদর সোহাগ করতাম … হে হে, বুঝতেই পারছো, কী বলতে চাইছি। এরপর থেকে আমি একদম চাঙা, কোন সমস্যা হয় না। তুমিও ওরকম একটা কিছু করে দেখো, ফল পাবে।’

হপ্তাখানেক পর বস দেখলেন, অফিসে বাবুর কাজ চলছে দারুণ। টেলিফোন, ফ্যাক্স, কম্পিউটার নিয়ে দক্ষযজ্ঞ কান্ড একেবারে। বস হাসলেন, ‘কী মিয়া, পরামর্শ কাজে লাগলো?’

বাবু উৎফুল্ল গলায় বললো, ‘জ্বি স্যার, একেবারে হাতে হাতে। আর ভাবীর হাতের রান্না তো অপূর্ব!’

কুকুর কি করেছে!!!

এক বিবিহিত লোক ঠিক করলো সে তার সুন্দরী সেক্রেটারির সাথে অফ-আউয়ারে কাজ করবে(উদ্দেশ্য পরিষ্কার!!!) সে কোন রকম একটা অজুহাত দাড় করিয়ে বৌ কে ম্যনেজ করলো।
তো কাজ শেষে সে তার সেক্রেটারিকে নিয়ে গেলো ডিনারে। ঘটনার পরিক্রমাই এক সময় সে সুন্দরী সেক্রেটারির নির্জন এপার্টমেন্টে এসে পৌছালো এবং “যাহবার তাই হলো!!!”
কিন্তু সেক্রেটারি ছিল অনেক বেশি“ক্রেজি”!!! উত্তেজনার বশে সে লোকটার নাকে মুখে খামছে দাগ করে দিলো। লোকটা তো বাসায় ফেরার পথে ভেবেই পাইনা বৌকে কিভাবে বোঝাবে।তো দশ-পাঁচ চিন্তা করতে করতে এক সময় সে বাসাতে আসলো। বাসাতে আসার সাথে সাথে তার আদরের কুকুর টা তার দিকে দৌড়ে আসলো। ব্যস……সাথে সাথে তার মাথাতে বুদ্ধি খেলে গেলো!!!
সে বাসার মেঝেতে পড়ে যাবার ভান করে শুয়ে পড়লো এবং চিৎকার করে বৌকে ডেকে বলল-
”বৌ বৌ দেখো তোমার কুকুর আমার কি করেছে!!!! আমার নাক মুখ তো শেষ!!!”
এক বুক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বৌ পরম স্বস্তির হাসি হেসে বলে-
“আরে ওইটা তো কিছুই না। দেখো তোমার কুকুর আমার কি করেছে”
এই বলে বৌ তার খামছি আর দাগে ভরা বক্ষ যুগল বের করে দেখালো!!!!!!!

Thursday 6 September 2018

সাপ্লিমেন্টারি ফুড

যারা বাচ্চাকাচ্চাদের হরলিক্স, কমপ্ল্যান, বুস্ট,মালটোভা ইত্যাদি খাওয়ান তাদের জন্যে এই লেখাটা পড়া জরুরী বলে মনে করছি।
ইন্ডিয়া তে হরলিক্স এর “টলার,স্টংগার, শার্পার” বিজ্ঞাপন চরম তুঙ্গে । একই হরলিক্স এর বিজ্ঞাপন প্রচার করছিল নেপালী এক চ্যানেল। নেপালী সেই চ্যানেল ব্রডকাস্ট হচ্ছিল লন্ডনের কিছু নেপালী পাড়ায়।
লন্ডনের এক এডভোকেট তো সেই বিজ্ঞাপন দেখে আকাশ থেকে পড়লেন। কারন ব্রিটেনে “ঘুমের পিল” এইড হিসেবে খাওয়ানো হয় হরলিক্স মল্টেড দুধকে । সেটা কিভাবে টলার স্ট্রংগার শার্পার করে সেটা জানতে আইনী নোটিশ পাঠিয়ে দেন। পরে সেই দেশে এই বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয় সরকারী ভাবে। তারা তখন মস্করা করেই বলেছিল- “দক্ষিন এশিয়ানরাই এই সব জিনিস খাবার হিসেবে খাবে”। তাই হচ্ছে আজকাল আমাদের দেশে ।
আমাদের দৈনিক খাবারের আইডিয়াল মেনু কে “RDA” বলে । আর ব্যালেন্সড ডায়েট হইতে যা যা লাগে তার খুব সামান্যই আছে এইসব খাবারে । আসল কথা হলো- হরলিক্স অথবা কমপ্লান এর মত খাবার US FDA এপ্রুভড না। তবুও সবাই খাচ্ছে মুড়ির মত। আর বিজ্ঞাপনের প্যাচে পড়ে – সব পুষ্টি গুনের আশায় ভাত মাছ বাদ দিয়া হরলিক্স আর কমপ্লান নিয়া পইড়া থাকে মায়েরা।
“বর্নভিটা” নামক আরেক দুধ কোম্পানী দাবী করে – তাদের দুধে দৈনিক চাহিদার ৪০% ভাগ প্রোটিন চাহিদা পুরণ করে। অথচ তাদেরি ফাইন প্রিন্টে লেখা আছে বর্নভিটার দুধে খুব সামান্যই প্রোটিন আছে। খাড়ার উপ্রে কেমনে কথা ঘুরায়ালায় এরা।
হরলিক্স এবং কমপ্লান দুইটা কোম্পানীই দাবী করে তাদের দুধে সুষম পরিমানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট,
ফ্যাট, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। কিন্তু কমপ্লানে প্রতি ১০০ গ্রামে এদের পরিমান যথাক্রমে ১৮ গ্রাম, ৬২ গ্রাম, ১১ গ্রাম, ৮০০ মিগ্রা ও ৭৮০ মিগ্রা । আর সেখানে হরলিক্সে প্রতি ১০০ গ্রামে এদের পরিমান যথাক্রমে – ১১ গ্রাম, ১৪ গ্রাম, ২ গ্রাম , ৭৪১ মিগ্রা ও ২৮০ মিগ্রা । এদের তুলনায় বর্নভিটা ও
বুস্টে এদের পরিমান অনেক কম থাকে।
তাহলে এখন বলুন কোনটা আসলে সুষম। দামের হিসাবে কিন্তু সবাই একই সমান প্রায়। সুতরাং আপনার শিশুর পুষ্টি চাহিদা ডায়েটিশিয়ানের কাছে গিয়ে করুন। বিজ্ঞাপনে মুগ্ধ হয়ে ভুল বুঝে না।
যাই হোক- জীবনের প্রথম ৬ মাস মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নাই। কিন্তু বছরের পর বছর যদি বাচ্চা কে সাপ্লিমেন্টারি ফুড না দিয়ে দুধের উপর নির্ভরশীল করে ফেলেন , তাহলে “মিল্ক ইঞ্জুরি” নামক রোগের শিকার হতে পারে আপনার বাচ্চা। সেই বাচ্চা ফুলাফাপা থাকবে (edematous) প্রোটিনের অভাবে। কিন্তু ভিতর দিয়া সব ধরনের নিউট্রিশনাল ডেফিসিয়েন্সি তে ভুগবে। তখন কই যাইবো গিয়া টলার স্ট্রংগার শার্পার।
# বিজ্ঞাপন মানুষের মাথায় ভুত হিসেবে ঢুকছে। আপনার বিবেচনা ও বিবেককে নষ্ট করে দিচ্ছে। সচেতন হোন নিজের জন্য । নিজের সন্তানের জন্য।

Monday 20 August 2018

কটা বাজে ?

যুবক : আঙ্কেল কটা বাজে ?
আঙ্কেল : বলবো না !
যুবক : কেন ?
আঙ্কেল : আরেকদিন যে কোনও জায়গায় দেখা হলে জিজ্ঞাসা করবে তাই।
যুবক : করতেই তো পারি !
আঙ্কেল : সে জন্যই বলব না
যুবক : কারণ টা কি ?
আঙ্কেল : এই ধর এই ভাবে কথা বলতে বলতে আমরা পরিচিত হবো !
যুবক : হতেই তো পারি আঙ্কেল !!
আঙ্কেল: হঠাৎ আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাবে
যুবক : যেতেই তো পারি !
আঙ্কেল : চোখের সামনে পড়লে বাড়িতে আসতে বলবো ভদ্রতার খাতিরে
যুবক : এটা তো যে কোন ভদ্রলোকই বলবে !!
আঙ্কেল : বাসায় এনে বসতে দেব,তারপর চা এনে দেব!
যুবক : এটাই তো স্বাভাবিক !
আঙ্কেল : তারপর তুমি বলবে চা টা দারুন হয়েছে কে তৈরি করছে ??
যুবক : ভাল হলে তো বলতেই পারি !
আঙ্কেল : আমি বলবো আমার মেয়ে, তারপর তুমি বলবে দেখি আপনার মেয়েকে, এত ভাল চা বানায় !
যুবক : তাকে একটা ধন্যবাদ জানাইতেই পারি !
আঙ্কেল : ধন্যবাদ জানালে হাই, হ্যালো এসব হবে, কিছু কথাবার্তা হবে!
যুবক : হতেই তো পারে!
আঙ্কেল : তারপর মাঝে মাঝে আমার বাড়ি আসতে থাকবে !
যুবক : আসলে তো সমস্যা হবে না !
আঙ্কেল : এক সময় ভালোবাসা হবে, তোমার মিষ্টি কথায় আমার মেয়ে তোমার প্রেমে পড়তে পারে !
যুবক : কি যে বলেন আঙ্কেল লজ্জা লাগে !
আঙ্কেল : এক সময় বিয়ের জন্য প্রস্তুত হবে !
যুবক : প্রেম করলে তো বিয়ে করবো স্বাভাবিক !
আঙ্কেল : আমার কাছে চাইতে আসবে !
যুবক : গুরুজনের আশির্বাদ ছাড়া কি হয়, অবশ্যই আশির্বাদ চাইতে আসবো !
আঙ্কেল : তারপর আমার মেয়ে বলবে রাজি হয়ে যাও !
যুবক : আমাকে ভালবাসেতো তাই !
আঙ্কেল : SHUT UP
আমি এমন ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেব না যে একটা ঘড়ি কিনতে পারে না।

Friday 17 August 2018

ঘোমটা

আমার বৌমা আমায় দেখে ঘোমটা দেয় না
হোক আধুনিকা, তাই বলে কি....!
খোকাও দেখেছি এই বিষয়ে বৌমা কে কিছু বলে না।
বেড়াতে বেরোয় সপ্তাহ শেষে
সে বেরোক, তাই বলে জিন্স প্যান্ট পরে!
পুরোনো দিনের মানুষ তো, বড্ড চোখে লাগে।
আধুনিকতার একি আদিখ্যেতা বুঝি না বাপু,
বড়োদের সম্মান দেওয়াটা ঠিক যেন ঠিক আসে না ওদের,
মোবাইল ফোনটা আসার পর সমাজটা উচ্ছন্নে গ্যাছে একেবারে।
আমার দাদুভাইকেও ওদের মতো মানুষ করছে
খটমট ইংরাজী বলে, ফোনে কিসব করে
কম্প্যুটার খুলে গেম খেলে কিসব,
আমি যেভাবে খোকাকে মানুষ করেছি
তার ধারেপাশেও যায়না ওদের অভিভাবকত্ব।
এক রবিবার আমাকেও জোর করে নিয়ে গেল সিনেমা দেখাতে
গিয়েই ঢুকে পড়ল হলঘরে, টিকিট নাকি ফোনে রয়েছে
বিশাল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মোটা গদির চেয়ার ভরা হলঘর,
খোকা কিনে আনল প্রকান্ড এক ঠোঙায় ভুট্টাভাজা
বলল খেয়ে দেখো বাবা এটা পপকর্ন, তা বেশ খেতে ছিল।
আরামে বসে সিনেমা দেখলাম, মন টা ফুরফুরে হয়ে গেল।
সিনেমা দেখে বেরিয়ে এক রেঁস্তোরাতে খেতে নিয়ে গেল
দারুন সাজানো পরিবেশ, চেয়ারের জায়গায় সোফা,
আশেপাশে সবাই চামচে খাচ্ছে, হাতে খেতে ইতস্তত করছি
এমন সময় দাদুভাই বলল আমরাও আজ দাদুর মতো হাতে খাই।
খাওয়া সেরে বাড়ি ফিরে শুয়েছি, পেট ভার
এতো মশলা দেওয়ার খাবারের অভ্যেস নেই আর
শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি অস্বস্তিতে
এমন সময় বৌমা এলো জোয়ানের আরক নিয়ে
বলল খেয়েন নাও বাবা, আরাম পাবে।
লাইট বন্ধ করে শুয়ে একটা কথায় মনে হল,
হোক না আমার বৌমা ঘোমটা ছাড়া
খোকা বেরোক না সপ্তাহ শেষে
দাদুভাই খেলুক না কম্প্যুটার গেম
ভালোবাসাটা তো আর আমার প্রতি কমেনি,
আধুনিক না হতে পারাটা আমার গোঁড়ামো।
মেকি ঐতিহ্যের ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম
আধুনিক জগৎটাও ঠিক আমাদের জগৎটার মতোই।।

Tuesday 7 August 2018

পনেরোই আগস্টের পরের দিন

প্রতি বছর পনেরোই আগস্টের পরের দিন
পাগলটাকে দেখা যায় এ গলিতে ও গলিতে ,
এ রাস্তায় ও রাস্তায় ,এ মোড়ে ও মোড়ে ,
ডাস্টবিনের পাশে ,নর্দমার ধারে।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চষে বেড়ায়
শহরের এ কানা থেকে সে কানা,
কাঁধে বস্তা নিয়ে ।

সকালবেলা কৌতুহল বশে
জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তোমার নাম কী?
বলেছিল ক্ষুদিরাম ।

দুপুরে দেখলাম
পোষ্ট অফিসের সামনে ,
ডাস্টবিনে হাত ঢুকিয়ে কী সব খুঁজছে ,
বললাম ,কী খুঁজছ ক্ষুদিরাম?
উত্তর দিল,
আমি ক্ষুদিরাম নই ,প্রফুল্ল চাকী।
অবাক হলাম ।

বিকালে আবার দেখা ,
বললাম, প্রফুল্ল চাকী চা খাবে?
ও বলল আমার নাম কানাইলাল ।
এবার বিস্ময়।

সন্ধের মুখে বড় রাস্তার মোড়ে
জটলা দেখে থমকে দাঁড়ালাম।
জিজ্ঞাসা করলাম ,কী হয়েছে?
ভীড়ের থেকে একজন বলল,
একটা চোর ধরা পড়েছে।

ভীড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম ,
ল্যাম্প পোষ্টে বাঁধা
সকালের ক্ষুদিরাম
দুপুরের প্রফুল্ল চাকী
বিকালের কানাইলাল।
পাশে মাল বোঝাই বস্তা,
যা ছিল সকালে খালি।

একজন বলল ,ঐ বস্তায় আছে
চুরি করা জিনিস ।
খটকা লাগল ,জিজ্ঞাসা করলাম ,চুরি করেছ?
ও নির্বিকার, কোনো উত্তর দিল না।
আমি বস্তার মুখের বাঁধন খুলে
মাটিতে ঢেলে দিলাম ,
বেরোল ছেঁড়া ,ফাটা ,দুমড়ানো ,মোচড়ানো,
প্লাস্টিকের ও কাগজের যত জাতীয় পতাকা ।
রাস্তা ,ডাস্টবিন ,নর্দমা থেকে কুড়িয়ে
ভরেছে বস্তায় ।

মুহূর্তে ভীড় হল অদৃশ্য,
চোখ ভরা জল নিয়ে
বাঁধন খুলে দিলাম পাগলের।
আমার মুখের দিকে তাকাল একবার,
তারপর মৃদুস্বরে বলল,
যেন কেউ পা দিয়ে মাড়িয়ে না যায় তাই,
তারপর আবার পতাকা গুলো বস্তায় ভরে নিয়ে
চলে গেল দূর থেকে দূরে,
আমি দাঁড়িয়ে রইলাম স্থানুর মতো
অপার বিস্ময় আর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ।

আপনাদের কাছে একটাই অনুরধ যে জাতিয় পতাকা রাস্তায় পোরে থাকলে ওটা দেখে চোলে যাবেন না...
জাতিয় পতাকা টাকে তুলে ভালো একটা নিদিষ্ট জাগায় রাখবেন.... 🇮🇳🇮🇳

Tuesday 31 July 2018

ভদ্র বাঙালি

শুনেছি কানাডিয়ানরা নাকি সবথেকে বিনয়ী জাতি, মানে তাদের কথায় কথায় নাকি "সরি" বলার অভ্যেস, কাউকে দুঃখ দিয়ে বা Rudely কথা নাকি বলেননা কখনো, ওদিকে ব্রিটিশদের ইংলিশ শুনলে বুঝবেন যথেষ্ট বিনম্র তারাও, কথায় কথায় যেন বিনম্রতা ও ভদ্রতা ঝরে পরে,
কিন্তু এসব ব্যাপারে আমরা বাঙালিরাও কম কিসে ? আসুন দেখে যাক-
- বাঙালিরা মুখের উপর না বলতে পারে না
তারা বলে " আচ্ছা! দেখছি.."
- বাঙালিরা প্রচন্ড খারাপ থাকলে সেটি বলে না,
বাঙালি বলে "এইতো চলে যাচ্ছে" ।
- সামনে পথ আটকে থাকলে "সামনে থেকে সর বাল, রাস্তা কি তোর বাপের?" না বলে,
বাঙালি বলে "দাদা একটু দেখি" ।
- ওদিকে পেট পুরে সাটিয়ে যাচ্ছেন, সব গোগ্রাসে গিলছে, বাড়ির কত্তার ফাটছে, জ্বলছে, মনে মনে বিস্তর গালাগালি করলেও আপনাকে বলবে " দেখো লজ্জা করে খাবে না কিন্তু, নিজেদের মনে করে চেয়ে-চিন্তে খেয়ো বাপু, ওরে কে আছিস? এদিকে দুটো লেগপিস দে" ..
- বাড়িতে অতিথি এসেছে, ফেরার নাম নেই, বিরক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাও দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করলেন, যাওয়ার সময় কিন্তু দিব্যি হেসে বলেন "হেঁ হেঁ দাদা আবার এই গরিবের বাড়িতে আসবেন কিন্তু । এত জলদি যাওয়ার কি আছে? আরো দুটো দিন থেকে যেতে পারতেন... "
- বন্ধুর সাথে অনেক বছর পর দেখা, তাকে গালাগালি দিয়ে গুষ্টি উদ্ধার না করে হেসে বলেন,
"হ্যা! ভাই এখন আর আমাদের চিনবি কেন বল? বড় মানুষ হয়ে গেছিস" .. ।
- বাঙালিরা কোন ভিক্ষুক ভিক্ষা না দিলে/দিতে পারলে চুপচাপ এড়িয়ে যায় না .. বলে "মাফ করবেন" ।
- কোন বড় চাকরি পেলে বা এক্সামে ফাটিয়ে নম্বর পেলে বা অনেক টাকা ইনকাম করলে বাঙালি গর্ব করে না, স্মিত হেসে বলে " এ আর এমন কি?"
- বাঙালিরা বেরোনোর সময় যাই বলেনা, বলে "আসি" এতে শুনতে বিনম্র লাগে ও মাতৃদেবীর আশীর্বাদে বিপদমুক্ত থাকে ।
- ট্রেনে মারাত্মক ভিড়, পা ফেলার জায়গা নেই, কুনোই দ্বারা অবিরত গুঁতো খাওয়া লোকটি কিন্তু গালাগালি দেননা , বলেন না " এই শুয়োরের বাচ্চা সরে দাঁড়া" .. বরং বলেন " দাদা একটু সরে দাঁড়াবেন, সুবিধা হত আর কি" ..
- বারবার ডাকার পরেও সারা না দিলে বাঙালি বলে না " এই কানাদোচা শুনতে পাস না ওয়ারা? .. বাঙালি বলে " ওঁওঁওঁওঁওঁওঁওঁ দাদা শুনছেন?"
- -
এরকম হাজারো বাঙালির বিনম্রতার নিদর্শন দেওয়া যায়। রোজ রোজ রাস্তা-ঘাটে-বাজারে-হাটে-ট্রেনে-বাসে-ভিড়ে বাঙালি তার মহানুভবতার পরিচয় দিয়ে আসছে, তাই বুক ঠুকে বলুন "আমি গর্বিত আমি বাঙালি" 😂✌️
আপনি কি এর মধ্যে কোনটা করেন? বা কোন বিনম্রতার কাজ করেন? কমেন্টে জানান ..
সবার জানা প্রয়োজন, কতটা উৎকৃষ্ট এই বাঙালি জাতি ।

Saturday 28 July 2018

গান্ধী বধ

সুপ্রীম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয় মাননীয় নাথুরাম গোডসের ভাষন --- আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি
(পর্ব - 1) গুগল থেকে সংগৃহীত
-------------------------------------------------------------------------
সুপ্রীম কোর্টের অনুমতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয় মাননীয় নাথুরাম গোডসের ভাষন --- আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি । 60 বছর এটা নিষেধ ছিল! আপনারা সকলেই জানেন --- 30 শে জানুয়ারী, 1948 গোডসে গুলি মেরে গান্ধীজীর হত্যা করেছিলেন। গুলি মেরে উনি ঘটনা স্হল থেকে পালিয়ে যান নি! উনি আত্মসমর্পণ করলেন! গোডসের সঙ্গে আরও 17 জনের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হল। মামলা চলাকালীন প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ করা হয় যাতে নাথুরাম গোডসে তাঁর বক্তব্য রাখতে পারেন। অনুমতি ত মিলল কিন্তু শর্ত সাপেক্ষ! সরকারের নির্দেশ অনুসারে কোর্টের বাইরে যাওয়া চলবে না। পরে ওনার ছোট ভাই গোপাল গোডসে দীর্ঘদিন মামলা চালানোর পর ---- প্রায় 60 বছর পর অনুমতি পাওয়া যায় সর্ব সমক্ষে রাখার।
1. নাথুরাম ভাবতেন --- গান্ধীজির অহিংসা ও মুসলিম তোষণ নীতি হিন্দুদের কাপুরুষে রূপান্তরিত করে দিচ্ছে। কানপুরে গণেশ শঙ্কর বিদ্যার্থীকে মুসলিমরা নির্মম ভাবে হত্যা করে। আর যে গণেশজী গান্ধীজির ভাব ধারায় প্রভাবিত ছিলেন ---- তাঁর হত্যাকান্ডে গান্ধীজি চুপ রইলেন!
2. 1919 এর জালিয়ানওয়ালা বাগের হত্যাকান্ডে সমস্ত আক্রোশে ফুঁসছিল। এই নৃশংস হত্যাকারী খলনায়ক জেনারেল ডায়ারের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু পরিস্কার মানা করে দেন!
3. গান্ধী খিলাফত আন্দোলনকে সমর্থন করে ভারতে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বুনলেন! নিজেকে কেবল মুসলিমদের হিতৈষী হিসাবে আভ-ভাবে বুঝিয়ে দিতেন। কেরালায় মোপলা মুসলিমরা 1500 হিন্দুকে হত্যা 2000 হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করল! গান্ধীজি বিরোধীতা পর্যন্ত করলেন না!
4. কংগ্রেসের ত্রিপুরা অধিবেশনে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস বিপুল সমর্থনে জয়লাভ করেন। কিন্তু গান্ধীর পছন্দের প্রার্থী ছিল সীতা রামাইয়া! সুভাষ চন্দ্র বোসকে পরে বাধ্য করা হয় ইস্তফা দেওয়ার জন্য।
5. 23 শে মার্চ, 1931 --- ভগৎ সিংকে ফাঁসী দেওয়া হয়। সারা দেশ এই ফাঁসী আটাকানোর জন্য গান্ধীকে অনুরোধ করেন। গান্ধী ভগৎ সিং এর কার্যকলাপকে অনুচিত মনে করে এই অনুরোধ রাখেন নি!
6. গান্ধীজি কাশ্মীরের রাজা হরি সিংকে পদত্যাগ করতে বলেন --- কারণ কাশ্মীর মুসলিম বহুল রাজ্য! উনি হরি সিংকে কাশী গিয়ে প্রায়শ্চিত্য করতে বলেন! অথচ হায়দ্রাবাদের নিজামের ক্ষেত্রে চুপ। গান্ধীজির নীতি ধর্ম বিশেষে বদলাত। পরে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের সক্রিয়তায় হায়দ্রাবাদকে ভারতের সঙ্গে রাখা হয়।
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি !!
(পর্ব - 2)
------------------------------------------------------------------------
7. পাকিস্তানে হিন্দু নিধন জজ্ঞ চলছে তখন। প্রাণ বাঁচাতে বেশ কিছু হিন্দু ভারতে চলে আসে। অস্হায়ী ভাবে আশ্রয় নেয় দিল্লীর মসজিদে। মুসলিমরা এর জন্য বিরোধীতা শুরু করে। ভয়ঙ্কর শীতের রাতে মা-বোন-বালক-বৃদ্ধ সকলকে জোর করে মসজিদ থেকে বের করে দেওয়া হয়। নিরব রইলেন গান্ধী!
8. গান্ধী মন্দিরে কোরান পাঠ ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করলেন! এর বদলে কোন মসজিদে গীতা পাঠের ব্যবস্থা করতে পারলেন না! অসংখ্য হিন্দু, ব্রাহ্মণ এর প্রতিবাদ করেছিল ---- গান্ধী আমলই দিলেন না!
9. লাহোর কংগ্রেসে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের জয় হল, কিন্তু গান্ধী জেদ করে এই পদ নেহেরুকে দিলেন। নিজের ইচ্ছা সফল করানোতে উনি সিদ্ধ হস্ত ছিলেন। ধর্না, অনশন, রাগ, বাক্যালাপ বন্ধ করা ---- এই কলা গুলির সাহায্যে যখন তখন ব্লাকমেল করতেন। সিদ্ধান্তের ঠিক ভুলও বিচার করতেন না।
10. 14 ই জুন, 1947 দিল্লীতে অখিল ভারতীয় কংগ্রেস সমিতির বৈঠক ছিল। আলোচনার বিষয় ছিল ভারত বিভাজন। এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেশ ভাগের প্রস্তাব গান্ধী সমর্থন করলেন। এই ইনিই একদিন বলেছিলেন ---- দেশ ভাগ করতে গেলে ওনার মৃত দেহের ওপর করতে হবে!
লাখ লাখ হিন্দু মারা গেলেও উনি চুপ থেকেছেন! মুসলিমদের কখনো শান্তি বজায় রাখার আদেশ দেন নি ---- যত আদেশ উপদেশ শুধু হিন্দুদের ওপর!
11. ধর্ম নিরপেক্ষতার ছদ্মবেশে "মুসলিম তোষণ" এর জন্ম দেন গান্ধী। যখন হিন্দী ভাষাকে রাষ্ট্র ভাষা করার বিরোধীতা করল মুসলিমরা ---- স্বীকার করলেন গান্ধী!
অদ্ভুত এক সমাধান দিলেন --- "হিন্দুস্তানী" (হিন্দী ও' উর্দুর খিচরি)! বাদশাহ রাম, বেগম সীতা বলার চল শুরু হল!
12. কিছু মুসলমানের বিরোধীতায় মাথা নত করলেন আবার ---- "বন্দে মাতরম" কে জাতীয় সংগীত হতে দিলেন না!
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি !!
(পর্ব - 3)
----------------------------------------------------------------------
13. গান্ধীজি বেশ কয়েকবার ছত্রপতি শিবাজী, মহারাণা প্রতাপ, গুরু গোবিন্দ সিংহকে পথভ্রষ্ট দেশভক্ত বলেছেন! কিন্তু সেখানে মোহাম্মদ আলি জিন্নাহকে "কায়দে আজম" বলে ডাকতেন! কি অদ্ভুত না!
14. 1931 এ জাতীয় কংগ্রেস স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা কেমন হবে তা নির্ধারণ করার জন্য একটি কমিটি তৈরী করে। এই কমিটি সর্ব সম্মতিতে ঠিক করেন ---- গেরুয়া বস্ত্রের পতাকা হবে যার মাঝখানে চরখা থাকবে। কিন্তু গান্ধীজির জেদে সেটা তেরঙ্গা করতে হয়! সব ওনারই মর্জির ওপর নির্ভর করত!
15. যখন সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটৈলের উদ্যোগে সোমনাথ মন্দিরের পুননির্মাণের প্রস্তাব সংসদে রাখা হয় ----- তখন উনি বিরোধীতা করলেন! এমনকি উনি মন্ত্রীমন্ডলেও ছিলেন না! কিন্তু অদ্ভুত ভাবে 13 ই জানুয়ারী, 1948 এ আমরণ অনশন শুরু করলেন --- যাতে সরকারী খরচে দিল্লীর মসজিদ তৈরী হয়! কেন এই দ্বিচারিতা? উনি হিন্দুকে হয়ত ভারতীয় ভাবতেনই না! আচ্ছা আদৌ হিন্দু ছিলেন ত?
16. গান্ধীজির মধ্যস্হায় ঠিক হয় ---- স্বাধীনতার পর ভারত পাকিস্তানকে 75 কোটি টাকা দেবে। 20 কোটি শুরুতেই দেওয়া হয়। বাকি ছিল 55 কোটি। কিন্তু 22 শে অক্টোবর, 1947 পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করে! পাকিস্তানের এই বিশ্বাস ঘাতকতার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীমন্ডল সিদ্ধান্ত নেয় বাকী পয়সা আর পাকিস্তানকে দেওয়া হবে না। কিন্তু সেই বেঁকে বসলেন লাঠিধারী! শুরু করলেন আবার ব্লাকমেল --- আবার অনশন। শেষে সরকার বাকি 55 কোটি টাকাও বিশ্বাসঘাতক পাকিস্তানকে দিতে বাধ্য হল!
এইরকম জিন্নাহ ও' অন্ধ পাকিস্তান প্রীতি দেখে বলতে পারি উনি প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপিতা ছিলেন ---- ভারতের নয়। প্রতিটি মুহুর্তে পাকিস্তানের সমর্থনে কথা বলেছেন ---- সে পাকিস্তানের দাবী যতই অন্যায় হোক!
!! আমি গান্ধীকে কেন বধ করেছি!!
(পর্ব 4 )
------------------------------------------------------------------------
আদালতে দেওয়া নাথুরাম গোডসের কিছু বয়ানের বঙ্গানুবাদ।
" আমি ওনাকে অনেক শ্রদ্ধা করি। কিন্তু কোন দেশভক্তকে দেশ ভাগ ও' একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করার অনুমতি দিতে পারি না। আমি গান্ধীকে মারি নি ---- বধ করেছি --- বধ। গান্ধীজিকে বধ করা ছাড়া আমার কাছে আর কোন উপায় ছিল না। উনি আমার শত্রু ছিলেন না ---- কিন্তু ওনার সিদ্ধান্ত দেশের বিপদ ডেকে আনছিল। যখন কোন ব্যক্তির কাছে আর কোন রাস্তা থাকে না ---- তখন ঠিক কাজ করার জন্য ভুল রাস্তা নিতে হয়।
মুসলিম লীগ ও' পাকিস্তান নির্মাণে গান্ধীজির সমর্থনই আমাকে বিচলিত করেছে। পাকিস্তানকে 55 কোটি টাকা পাইয়ে দেবার জন্য গান্ধীজি অনশনে বসেন। পাকিস্তানে অত্যাচারের জন্য ভারতে চলে আসা হিন্দুদের দুর্দশা আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল। গান্ধীজির মুসলিম লীগের কাছে মাথা নত করার জন্য অখন্ড হিন্দু রাষ্ট্র সম্ভব হয়নি। ছেলের পক্ষে মাকে টুকরো করে ভাগ করতে দেখা আমার অসহনীয় ছিল। নিজ দেশেই যেন বিদেশী হয়ে গেলাম।
মুসলিম লীগের সমস্ত অন্যায় আব্দার উনি মেনে চলছিলেন। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ---- ভারত মাতাকে পুনরায় টুকরো হওয়ার হাথ থেকে ও দুর্দশার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমাকে গান্ধীজির বধ করতেই হবে। আর সেইজন্যই আমি গান্ধীকে বধ করেছি।
আমি জানতাম এর জন্য আমার ফাঁসী হবে এবং আমি এর জন্য প্রস্তুত। আর এখানে যদি মাতৃভূমি রক্ষা করা অপরাধ হয় ----- তাহলে এরকম অপরাধ আমি বার বার করব ---- প্রত্যেক বার করব। আর যতক্ষণ না সিন্ধু নদী অখন্ড ভারতের মধ্যে না বাহিত হয় ---- আমার অস্থি ভাসিও না। আমার ফাঁসির সময় আমার এক হাতে কেশরীয় পতাকা ও' অন্য হাতে অখন্ড ভারতের মানচিত্র যেন থাকে। আমার ফাঁসিতে চড়ার আগে অখন্ড ভারত মাতার জয় বলতে চাই।
হে ভারত মাতা --- আমার খুব দুঃখ যে আমি কেবল এইটুকুই তোর সেবা করতে পেরেছি ।"

Popular Posts