Sunday, 1 November 2020

শিশি

কয়েক দিন ধরে ভোরবেলায় দেখছি খুব ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে । শোবার সময় বেশ গরম ই থাকে । তাই ফুল স্পীডেই পাখা চালিয়ে শুই। বউকে বললাম, বিছানায় একটা চাদর রেখো তো। কিন্তু কে শোনে কার কথা? যথারীতি এক ভোরে ঠান্ডা লাগতে পরণের লুঙ্গিটাকেই চাদরের মতো ব্যবহার করতে হোল । কিন্তু তাতে কি হয়? যা হবার তাই হলো । প্রচন্ড সর্দিতে চারদিন নাকানি চোবানি খেয়ে শেষে সিটি লাইফ নার্সিংহোমে গিয়ে ডাক্তারবাবুকে দেখালাম। তিনি গম্ভীর মুখে আমাকে ইউরিন পরীক্ষা করিয়ে নিতে বললেন । ওখানেই হবে । আমি নার্সকে জিগ্যেস করলাম শিশি কোথায় পাবো?  নার্স বললে, টয়লেটের বাইরেই একটা শেল্ফে শিশি রাখা আছে । স্যাম্পল টা নিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে চলে আসবেন ।

গিয়ে দেখি, কোন শিশিই সেখানে নেই । কোভিডের দৌলতে মনে হয় একটা খালি স্যানিটাইজারের শিশি পড়ে রয়েছে । অগত্যা তাতেই স্যাম্পল ভর্তি করে কাউন্টারে চলে এলাম । একটু পরে ই সচকিত হয়ে দেখলাম মোবাইলটা তাড়াহুড়োয় টয়লেটে ফেলে এসেছি । তড়িঘড়ি করে ছুটলাম। গিয়ে ভাগ্যবলে ওটাকে তো পেলাম, কিন্তু কাউন্টারে অনেক লোকের লাইন হয়ে গেছে । দেখি প্রত্যেকেই একটি বার করে আমার রেখে যাওয়া স্যাম্পল-এর শিশি থেকে বেশ করে স্যানিটাইজার ঢেলে নিয়ে হাতের চেটোয় , কনুই তে, ঘাড়ে, এমনকি মুখে ও ঘষছিলেন । কেউ কেউ আবার গন্ধ শুঁকে কমেন্টস করছেন,  বাজে মাল, মনে হয় ডুপ্লিকেট হবে ।

আমি বিস্ময়ে থ' মেরে গেছি । ভাবলাম সতর্ক করে কিছু বলবো । কিন্তু ততক্ষণে আর সময় নেই । শিশিটা প্রায় খালি হয়ে এসেছে । বললে তো, নির্ঘাত মারধোর খেতাম।

তাই বলে কিছু বলবো না, তাকি হয়? আপনাদের সবিনয়ে জানিয়ে রাখি, না দেখেশুনে কিছু ব্যবহার করতে যাবেন না শুধু মাত্র ফ্রি তে পাওয়া যাচ্ছে বলে ।

No comments:

Post a Comment

Popular Posts