Tuesday 5 November 2019

ধর্ষিতা বাঙালী



১৯৭১ এর তথ্যগুলো নতুন প্রজন্মদের
জানা বিশেষ জরুরী।
স্বাধীনতার পর ধর্ষিতা বাঙালী মহিলাদের চিকিৎসায় নিয়োজিত অষ্ট্রেলিয় ডাক্তার জেফ্রি ডেভিস গনধর্ষনের ভয়াবহ মাত্রা দেখে হতবাক হয়ে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে আটক এক পাক অফিসারকে জেরা করেছিলেন এই বলে- যে তারা কিভাবে এমন ঘৃণ্য কাজ করেছিলো।
তাদের সরল জবাব ছিলো;
আমাদের কাছে টিক্কা খানের নির্দেশনা ছিলো যে,
একজন ভালো মুসলমান কখনোই তার বাবার সাথে যুদ্ধ করবে না। 
তাই আমাদের যত বেশী সম্ভব বাঙালী মেয়েদের গর্ভবতী করে যেতে হবে।
যাতে এদের পরবর্তী প্রজন্মে পরিবর্তন আসে।
তারা যেন হয়ে ওঠে ভালো মুসলিম এবং ভালো পাকিস্তানী।”
আজ কেন যেন মনে হয় টিক্কা খান এবং নিয়াজীরা একাত্তরে হেরে গেলেও আসলে জিতে গেছে।
আজ রাস্তা-ঘাটে পাকিস্তানীদের অসংখ্য সমর্থক পাওয়া যায়।
পুরান ঘটনা ভুলে গিয়ে পাকিস্তানীদের শীতল ঘৃণার পরিবর্তে উষ্ণ ভালোবাসাও দেয়।
বর্তমানের তরুণেরা কি জানে একাত্তরের মার্চে মিরপুরের সেই বীভৎসতার কথা?
এক বাড়ি থেকে পরিবারের সবাইকে
ধরে এনে পাকিস্তানীরা,
কাপড় খুলতে বলেছিল সবাইকে।
রাজি না হওয়ায় বাবা ও ছেলেকে আদেশ করা হয় যথাক্রমে মেয়ে এবং মাকে ধর্ষণ করতে।
এতেও রাজি না হলে প্রথমে বাবা এবং ছেলে কে টুকরো টুকরো করে হত্যা করা হয় এবং মা মেয়ে দুজনকে দুজনের চুলের সাথে বেঁধে উলঙ্গ অবস্থায় টানতে টানতে ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়।
বর্তমানের তরুণেরা কি জানে,
একাত্তরে বাঙ্গালী নারীদের পাকিস্তানী সেনারা ধরে এনে কি পৈশাচিক নির্যাতন করতো?
রাজারবাগে পুলিশ লাইনে ধরে আনা বাঙ্গালী নারীদের উপর একসাথে ঝাঁপিয়ে পড়ত ওরা,
ধর্ষণ করতে করতে হঠাৎ ছুরি দিয়ে স্তন কেটে,
পশ্চাৎদেশের মাংস কেটে, যোনি ও গুহ্যদ্বারের মধ্যে সম্পূর্ণ ছুরি চালিয়ে দিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়তো ওরা।
মাঝে মাঝে বন্দুকের নল, বেয়নেট ও ধারালো ছুরি ঢুকিয়ে যোনি থেকে গলা পর্যন্ত চিরে ফেলতো।
তারপর এ সকল মেয়ের লাশ অন্যান্য মেয়েদের সম্মুখে ছুরি দিয়ে কেটে কুচি কুচি করে বস্তার মধ্যে ভরে বাইরে ফেলে দিত।
আর ছোট ছোট বালিকাদের যখন ধর্ষনে সুবিধা করতে পারতো না, তখন ওদের অসার রক্তাক্ত দেহ বাইরে এনে দুজন দু পা দু দিকে টেনে ধরে চড়চড়িয়ে ছিঁড়ে ফেলে দিত।
একাত্তরের নয় মাস গোপনে হাজারো মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা করার অপরাধে ডাঃ ফজলে রাব্বীকে ১৪ই ডিসেম্বর তুলে নিয়ে গিয়েছিল আলবদর আর পাকিস্তানীরা।
তাঁকে
হাত-পা আর চোখ বেঁধে ব্রাশফায়ার করে তুলে নিয়েছিল তার হার্টটা।
একাত্তরের ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বর নরপিশাচরা ৯৯১ জন শিক্ষাবীদ, ১৩ সাংবাদিক, ৪৯ চিকিৎসক, ৪২ আইনজীবী এবং ১৬ শিল্পী, সাহিত্যিক ও প্রকৌশলীকে উলঙ্গ করে, চোখ বেঁধে, বেয়নেটে খুচিয়ে খুচিয়ে, মলদারে লাঠি ঢুকিয়ে মেরে ফেলেছিলো।
এই তথ্যগুলো অবশ্য বাংলাদেশ নিবাসী এইসব আধুনিক পাকিমনাদের মনে কোন ছাপ ফেলে না।
পুরো দেশব্যাপি এরকম অসংখ্য লোমহর্ষক ঘটনা আছে,যা নতুন প্রজন্মদের জানা দরকার,জানা উচিৎ,জানানো উচিৎ...

No comments:

Post a Comment

Popular Posts