Tuesday, 3 November 2020

ধোকাবাজ

আমি একজন মধ্যবয়সী পুরুষ। ফেসবুকে আমার অনেক অনেক ফ্রেন্ড। তার মধ্যে অনেক মেয়ে ফ্রেন্ডও আছে। চ্যাট ট্যাট করে, নানারকম গল্পসল্প করে ভালই দিন কাটে। এরকম একজন হল প্রিয়া। বয়স ত্রিশ পয়ত্রিশ, বিবাহিতা। অসাধারণ সুন্দরী। কি সুন্দর করে কথা বলে ইনবক্সে! কথা বলতে বলতে খেয়ালই থাকে না সময় কোনদিক দিয়ে চলে যায়। একদিন সে কল করে বলে, " আমার স্বামী ব্যবসার কাজে কোলকাতা গেছে, বাড়িতে কেউ নেই। তুমি এসো"। তোমার স্বামী যদি ফিরে আসে এর মধ্যে?
" আরে আসবে না। আর আসলে তুমি একটা ন্যাকড়া নিয়ে দরজা জানালা মুছতে থাকবে। আমি ওকে বলব তুমি ক্লিনিং কোম্পানী থেকে এসেছো, ঘর পরিস্কার  করতে।  এমনিতেও পূজো সামনে।"  আচ্ছা ঠিক অাছে, আসছি। কি অদ্ভুত! আমি যাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে ওর স্বামী এসে হাজির। কি আর করা! জানালার গ্লাস মুছতে শুরু করলাম। গ্রীল পরিস্কার করলাম। সবগুলো জানালা দরজা পরিস্কার করলাম। রান্নাঘরের কোনাকানি পরিস্কার করলাম। বাথরুম পরিস্কার করলাম। 
ফ্যান মুছলাম, ফার্নিচার মুছলাম। ৪-৫ ঘন্টার মধ্যে তাদের পুরো বাড়ি পরিস্কার ঝকঝকে করে দিলাম। সে আর তার স্বামী মিলে সারাক্ষণ এটা সেটা ইন্সট্রাকশন দিয়ে গেলো। পরিস্কার করা শেষ হলে তার স্বামী জিজ্ঞাসা করল, "আপনার বিল কত হয়েছে?" সে আগ বাড়িয়ে উত্তর দিল, " জানু আমি তো আগেই অনলাইনে পেমেন্ট করে দিয়েছি। তারপর ওরা লোক পাঠিয়েছে।" "ও আচ্ছা" বলে ওর স্বামী আমাকে ১০০ টাকা বখশিশ্ দিয়ে দিল। আমি বাড়ি চলে এলাম। কাজের লোক পাওয়া যে কঠিন আজকাল! 
তাই তো বলি পোলাপান, ফেসবুকের সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে দেখে পটে যাস না । দুনিয়াটা ভরে গেছে ধোকাবাজে।
 🤔🤔

Sunday, 1 November 2020

শিশি

কয়েক দিন ধরে ভোরবেলায় দেখছি খুব ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে । শোবার সময় বেশ গরম ই থাকে । তাই ফুল স্পীডেই পাখা চালিয়ে শুই। বউকে বললাম, বিছানায় একটা চাদর রেখো তো। কিন্তু কে শোনে কার কথা? যথারীতি এক ভোরে ঠান্ডা লাগতে পরণের লুঙ্গিটাকেই চাদরের মতো ব্যবহার করতে হোল । কিন্তু তাতে কি হয়? যা হবার তাই হলো । প্রচন্ড সর্দিতে চারদিন নাকানি চোবানি খেয়ে শেষে সিটি লাইফ নার্সিংহোমে গিয়ে ডাক্তারবাবুকে দেখালাম। তিনি গম্ভীর মুখে আমাকে ইউরিন পরীক্ষা করিয়ে নিতে বললেন । ওখানেই হবে । আমি নার্সকে জিগ্যেস করলাম শিশি কোথায় পাবো?  নার্স বললে, টয়লেটের বাইরেই একটা শেল্ফে শিশি রাখা আছে । স্যাম্পল টা নিয়ে ক্যাশ কাউন্টারে চলে আসবেন ।

গিয়ে দেখি, কোন শিশিই সেখানে নেই । কোভিডের দৌলতে মনে হয় একটা খালি স্যানিটাইজারের শিশি পড়ে রয়েছে । অগত্যা তাতেই স্যাম্পল ভর্তি করে কাউন্টারে চলে এলাম । একটু পরে ই সচকিত হয়ে দেখলাম মোবাইলটা তাড়াহুড়োয় টয়লেটে ফেলে এসেছি । তড়িঘড়ি করে ছুটলাম। গিয়ে ভাগ্যবলে ওটাকে তো পেলাম, কিন্তু কাউন্টারে অনেক লোকের লাইন হয়ে গেছে । দেখি প্রত্যেকেই একটি বার করে আমার রেখে যাওয়া স্যাম্পল-এর শিশি থেকে বেশ করে স্যানিটাইজার ঢেলে নিয়ে হাতের চেটোয় , কনুই তে, ঘাড়ে, এমনকি মুখে ও ঘষছিলেন । কেউ কেউ আবার গন্ধ শুঁকে কমেন্টস করছেন,  বাজে মাল, মনে হয় ডুপ্লিকেট হবে ।

আমি বিস্ময়ে থ' মেরে গেছি । ভাবলাম সতর্ক করে কিছু বলবো । কিন্তু ততক্ষণে আর সময় নেই । শিশিটা প্রায় খালি হয়ে এসেছে । বললে তো, নির্ঘাত মারধোর খেতাম।

তাই বলে কিছু বলবো না, তাকি হয়? আপনাদের সবিনয়ে জানিয়ে রাখি, না দেখেশুনে কিছু ব্যবহার করতে যাবেন না শুধু মাত্র ফ্রি তে পাওয়া যাচ্ছে বলে ।

Popular Posts