*বৃদ্ধা* ---- বাবা তোমায় তো আমি চিনি না , নিজের পরিচয় দাও,
আমি অবশ্যই জল খাওয়াবো।
*কালিদাস বললেন* ----- আমি পথিক, দয়া করে একটু জল দিন।
*বৃদ্ধা বললেন* ---- তুমি পথিক কি করে হতে পারো ? পথিক তো কেবল দুজন, এক সূর্য ☀ দ্বিতীয় চন্দ্রমা🌙 এরা কখনো থামেন না সর্বদাই চলায়মান । তুমি এদের মধ্যে কে সত্যি করে বল ?
*কালিদাস বললেন* ----- তাহলে আমি অতিথি , বড়ই তৃষ্ণার্ত দয়া করে আমাকে একটু জল পান করান।
*বৃদ্ধা বললেন* ---- তুমি অতিথি কি করে হতে পারো ? সংসারে দুজনই মাত্র অতিথি, এক অর্থ বা সম্পদ আর দ্বিতীয় যৌবন -- এরা আসেন আবার চলেও যান , সত্যি করে বলো তুমি কে?
*কালিদাস তর্কে পরাজিত এবং হতাশ হয়ে বললেন* ---- আমি একজন সহ্যশীল, এবার অন্তত একটু জল দিন!
*বৃদ্ধা বললেন* ---- না না সহ্যশীল তো মাত্র দুজন, এক ধরিত্রী যিনি পাপী-পুণ্যাত্মা সকলের ভার গ্রহণ করেন বা বহন করেন। দ্বিতীয় বৃক্ষ ---- তাকে যতই পাথর দিয়ে আঘাত করো তবু সে মিষ্টি ফল দিয়ে সেবা করে যায় । সত্যি বলো তুমি কে?
*কালিদাস বিরক্ত হয়ে চেঁচিয়ে বললেন* ---- তাহলে আমি উদ্ধত হঠকারী এবার অন্তত একটু জল তো দিন ।
*বৃদ্ধা বললেন* ---- অসত্য বলছো । হঠকারী দুই -- এক নখ আর দ্বিতীয় চুল এদের যতবারই কাটো এরা বার- বার বেড়েই ওঠে । সত্য বল ব্রাহ্মণ তুমি কে ?
*অপমানিত পরাজিত কালিদাস বললেন* ---- তাহলে ধরুন আমি মূর্খ , এবার একটু জল দেবেন কি ?
*বৃদ্ধা বললেন* ---- না, তুমি মূর্খ কি করে হতে পারো ? মূর্খ তো দুজন ! এক এমন রাজা ---- যিনি বিনা যোগ্যতাতেই সবার উপর শাসন করেন । আর দ্বিতীয় এমন রাজপন্ডিত বা পুরোহিত যিনি রাজা কে প্রসন্ন করার জন্য ভুলভাল তর্কের সাহায্যে ভুলকেও সঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করেন ।
*কালিদাস* --- আর কিছু না বলতে পেরে সটান বৃদ্ধার পায়ে পড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন।
*বৃদ্ধা বললেন* -- *ওঠো বৎস* কন্ঠস্বর অন্যরকম হওয়ায় কালিদাস চোখ তাকিয়ে অবাক দৃষ্টিতে দেখলেন স্বয়ং *মা সরস্বতী* তাঁর সামনে দণ্ডায়মান । *কালিদাস* করজোড়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন ।
*মা বললেন* --- বৎস সর্বদা মনে রেখো শিক্ষা বা বিদ্যা কখনো দম্ভ বা অহংকার দেয় না , যা দেয় তা হল *বিনয় এবং বিনম্রতা* ।
________________________________
_চলুন আমরা সকলেও *বিনয় এবং বিনম্রতার* সাধনায় রত হই_
🙏🙏🙏