Friday 7 September 2018

অসুর বধ

কলিযুগে যদি মহিষাসুরমর্দিনী জন্মাতেন তাহলে অত কষ্ট করে, যুদ্ধ করে, রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে আমাদের মা দুর্গা ভিলেনেশ্বর মহিষাসুরকে বধ করতেন না, বাঙালির রক্তে ল্যাদ তো আছেই ..তাই না? । তার কাছে অনেক সহজ উপায় ছিল ..অনেক মডার্ন পন্থা অনুসরণ করতেন ..
এই যেমন ধরুন ..ব্যাটাকে একটু হাত-পা বেঁধে কানে হেডফোন গুঁজে টোস্ট বিস্কুট খাওয়াতে খাওয়াতে রুমা ঘোষের গান বা দিদির হিন্দি/ইংলিশ বক্তৃতা শুনিয়ে দিতেন ..পুরো টোটাল "গ্রাভিটি অফ দি পরিস্থিতি" হয়ে যেত, যদিও ভাটশ্রী বিপ্লব দেবের বাণী একই কাজ দিত বা সন্ধ্যাবেলায় টিভির সামনে বসিয়ে এক কাপ চা দিয়ে হালকা করে "সাত ভাই চম্পা" দেখিয়ে দিতেন বা দেবের পাগলু ২ বা পাথরম্যানের গ্যাংস্টার .. ব্যস কেল্লা ফতে ।
আরো অনেক সহজ উপায় ছিল ..পশ্চিমবঙ্গে জেনারেল ক্যাটাগরিতে জন্ম করিয়ে দিতেন ঋষিবরকে Sms করে,ব্যস! ব্যাটা পাষন্ড চাকরি খুঁজতে খুঁজতে বেকারত্বের জ্বালায় মরে যেত বা বাংলা যেকোন বোর্ড KU,SU,CU, VU তে কোনকিছু অনার্স নিয়ে ভর্তি করালেও আশানুরুপ ফল পাওয়া যেত ।
বা ধরুন ভুলিয়ে-ভালিয়ে কলকাতায় ঘুরতে নিয়ে আসতেন, কোন ব্রিজের তলায় রেখে পালিয়ে যেতেন, ব্যস! নিমিষে কেল্লাফতে! রেস্তোরাঁর মাংস খাওয়ালেও ব্যাটা পেটে গলযোগ বাধিয়ে নির্ঘাত মরত!
আবার ধরুন ব্যাটাকে শিক্ষিত করার মন্ত্র নিতেন,কোন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভর্তি করে দিতেন, মেসে থাকত আবার স্টুডেন্ট অসুর.. যেই মেসের খাবার মুখে তুলেছে.. ব্যস ছবি!
তারপরে ধরুন একটু ফুসলে-ফাসলে coc এর নেশা ধরাতেন, ব্যাটা অসুর খেটে-খুঁটে Th10 বানাত, একদিন সুযোগ বুঝে গুগলে ব্যাইন্ডিং না করিয়েই তা ঝপ করে ডিলিট করে দিতেন ..ব্যস! অসুর ব্যাটা শেষে ডিপ্রেশনে ভুগে ভুগে মোমো খেলে দশতলা ঝাঁপ দিয়ে মরত ।
তবে হ্যাঁ! সবথেকে সহজ উপায় হয়তো এটাই নিতেন .. অসুরকে মানুষ করে তুলতেন, ভদ্র-সভ্য-পুরো ঝিকঝাঁক .. তারপরে অসুরকে ভালোবাসতে শেখাতেন ..ব্যস! হ্যা! মশাই ..সত্যিকারের ভালোবাসা!
অসুর তারপর থেকে রোজ রোজ বধ হত ..

তোমার বাবা মা কী করেন?

ছোট্ট বাবুর ক্লাসে নতুন শিক্ষিকা মিস মিলি এসেছেন। তিনি প্রথমেই সকলের সঙ্গে পরিচিত হবেন। কাজেই বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে বললেন, ‘ছোট্ট সুজি, তোমার বাবা মা কী করেন?’

‘আমার বাবা একজন বিজ্ঞানী, আর মা একজন ডাক্তার।’

মিষ্টি হেসে মিস মিলি বললেন, ‘ছোট্ট টুনি, তোমার বাবা মা কী করেন?’

‘আমার বাবা একজন শিক্ষক, আর মা একজন উকিল।’

‘বাহ! ছোট্ট বাবু, তোমার বাবা মা কী করেন?’

বাবু বলল, ‘আমার বাবা মারা গেছেন, আর মা একজন পতিতা।’

মিস মিলি রেগে আগুন হয়ে প্রিন্সিপালের কাছে পাঠালেন বাবুকে। মিনিট পাঁচেক পর ছোট্ট বাবু ফিরে এল।

‘তুমি প্রিন্সিপালকে বলেছ, তুমি আমার সঙ্গে কেমন আচরণ করেছ?’

‘জ্বি মিস।’ বলল বাবু।

‘তিনি কী বললেন?’

‘বললেন, আমাদের সমাজে কোনও কাজই তুচ্ছ নয়। তারপর আমাকে একটা আপেল খেতে দিলেন, আর বাসার ফোন নাম্বার লিখে রাখলেন।’

মৌমাছিরাও ওগুলোই করে

রাতে শোওয়ার আগে স্ত্রীর মনে পড়ল আজ বিকেলে ছেলেকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে পাশের বাড়ির টুনির সঙ্গে কী যেন ফিসফিস করতে দেখেছেন।

তিনি স্বামীকে ডেকে বললেন, ‘হ্যা গো শুনছ, আমাদের ছেলে বড় হচ্ছে। তোমার কি মনে হয় না ওকে কিছু ব্যাপার বুঝিয়ে বলা উচিত? তুমি বরং আজকেই ওকে সেক্সের ব্যাপারে সবকিছু বুঝিয়ে বল। তবে একবারেই সব বলে দিও না যেন, ফুল কিংবা মৌমাছি থেকে শুরু কর।’

অনিচ্ছা সত্ত্বেও স্বামী বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়াল। ছেলেকে আড়ালে ডেকে নিয়ে গেল। ‘হ্যা রে বাবু, তোর কি মনে আছে, গত হপ্তায় টুনির সঙ্গে তুই আর আমি কী করেছিলাম?’

‘হ্যাঁ বাবা।’

‘মৌমাছিরাও ওগুলোই করে।’

ভাবীর হাতের রান্না তো অপূর্ব

বাবুর অফিসের কাজে মন বসে না। তার গা ম্যাজম্যাজ করে, মেজাজটাও খারাপ হয়ে থাকে।

বস একদিন ডাকলেন তাকে।

‘শোনো, এভাবে তো চলবে না। তোমাকে চাঙা হতে হবে। আমারও এরকম হতো আগে। তখন কী করতাম জানো? লাঞ্চ আওয়ারে বাড়ি চলে যেতাম। তোমার ভাবীর হাতের মজার রান্না খেয়ে, ঘন্টাখানেক তাকে চুটিয়ে আদর সোহাগ করতাম … হে হে, বুঝতেই পারছো, কী বলতে চাইছি। এরপর থেকে আমি একদম চাঙা, কোন সমস্যা হয় না। তুমিও ওরকম একটা কিছু করে দেখো, ফল পাবে।’

হপ্তাখানেক পর বস দেখলেন, অফিসে বাবুর কাজ চলছে দারুণ। টেলিফোন, ফ্যাক্স, কম্পিউটার নিয়ে দক্ষযজ্ঞ কান্ড একেবারে। বস হাসলেন, ‘কী মিয়া, পরামর্শ কাজে লাগলো?’

বাবু উৎফুল্ল গলায় বললো, ‘জ্বি স্যার, একেবারে হাতে হাতে। আর ভাবীর হাতের রান্না তো অপূর্ব!’

কুকুর কি করেছে!!!

এক বিবিহিত লোক ঠিক করলো সে তার সুন্দরী সেক্রেটারির সাথে অফ-আউয়ারে কাজ করবে(উদ্দেশ্য পরিষ্কার!!!) সে কোন রকম একটা অজুহাত দাড় করিয়ে বৌ কে ম্যনেজ করলো।
তো কাজ শেষে সে তার সেক্রেটারিকে নিয়ে গেলো ডিনারে। ঘটনার পরিক্রমাই এক সময় সে সুন্দরী সেক্রেটারির নির্জন এপার্টমেন্টে এসে পৌছালো এবং “যাহবার তাই হলো!!!”
কিন্তু সেক্রেটারি ছিল অনেক বেশি“ক্রেজি”!!! উত্তেজনার বশে সে লোকটার নাকে মুখে খামছে দাগ করে দিলো। লোকটা তো বাসায় ফেরার পথে ভেবেই পাইনা বৌকে কিভাবে বোঝাবে।তো দশ-পাঁচ চিন্তা করতে করতে এক সময় সে বাসাতে আসলো। বাসাতে আসার সাথে সাথে তার আদরের কুকুর টা তার দিকে দৌড়ে আসলো। ব্যস……সাথে সাথে তার মাথাতে বুদ্ধি খেলে গেলো!!!
সে বাসার মেঝেতে পড়ে যাবার ভান করে শুয়ে পড়লো এবং চিৎকার করে বৌকে ডেকে বলল-
”বৌ বৌ দেখো তোমার কুকুর আমার কি করেছে!!!! আমার নাক মুখ তো শেষ!!!”
এক বুক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বৌ পরম স্বস্তির হাসি হেসে বলে-
“আরে ওইটা তো কিছুই না। দেখো তোমার কুকুর আমার কি করেছে”
এই বলে বৌ তার খামছি আর দাগে ভরা বক্ষ যুগল বের করে দেখালো!!!!!!!

Thursday 6 September 2018

সাপ্লিমেন্টারি ফুড

যারা বাচ্চাকাচ্চাদের হরলিক্স, কমপ্ল্যান, বুস্ট,মালটোভা ইত্যাদি খাওয়ান তাদের জন্যে এই লেখাটা পড়া জরুরী বলে মনে করছি।
ইন্ডিয়া তে হরলিক্স এর “টলার,স্টংগার, শার্পার” বিজ্ঞাপন চরম তুঙ্গে । একই হরলিক্স এর বিজ্ঞাপন প্রচার করছিল নেপালী এক চ্যানেল। নেপালী সেই চ্যানেল ব্রডকাস্ট হচ্ছিল লন্ডনের কিছু নেপালী পাড়ায়।
লন্ডনের এক এডভোকেট তো সেই বিজ্ঞাপন দেখে আকাশ থেকে পড়লেন। কারন ব্রিটেনে “ঘুমের পিল” এইড হিসেবে খাওয়ানো হয় হরলিক্স মল্টেড দুধকে । সেটা কিভাবে টলার স্ট্রংগার শার্পার করে সেটা জানতে আইনী নোটিশ পাঠিয়ে দেন। পরে সেই দেশে এই বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয় সরকারী ভাবে। তারা তখন মস্করা করেই বলেছিল- “দক্ষিন এশিয়ানরাই এই সব জিনিস খাবার হিসেবে খাবে”। তাই হচ্ছে আজকাল আমাদের দেশে ।
আমাদের দৈনিক খাবারের আইডিয়াল মেনু কে “RDA” বলে । আর ব্যালেন্সড ডায়েট হইতে যা যা লাগে তার খুব সামান্যই আছে এইসব খাবারে । আসল কথা হলো- হরলিক্স অথবা কমপ্লান এর মত খাবার US FDA এপ্রুভড না। তবুও সবাই খাচ্ছে মুড়ির মত। আর বিজ্ঞাপনের প্যাচে পড়ে – সব পুষ্টি গুনের আশায় ভাত মাছ বাদ দিয়া হরলিক্স আর কমপ্লান নিয়া পইড়া থাকে মায়েরা।
“বর্নভিটা” নামক আরেক দুধ কোম্পানী দাবী করে – তাদের দুধে দৈনিক চাহিদার ৪০% ভাগ প্রোটিন চাহিদা পুরণ করে। অথচ তাদেরি ফাইন প্রিন্টে লেখা আছে বর্নভিটার দুধে খুব সামান্যই প্রোটিন আছে। খাড়ার উপ্রে কেমনে কথা ঘুরায়ালায় এরা।
হরলিক্স এবং কমপ্লান দুইটা কোম্পানীই দাবী করে তাদের দুধে সুষম পরিমানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট,
ফ্যাট, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। কিন্তু কমপ্লানে প্রতি ১০০ গ্রামে এদের পরিমান যথাক্রমে ১৮ গ্রাম, ৬২ গ্রাম, ১১ গ্রাম, ৮০০ মিগ্রা ও ৭৮০ মিগ্রা । আর সেখানে হরলিক্সে প্রতি ১০০ গ্রামে এদের পরিমান যথাক্রমে – ১১ গ্রাম, ১৪ গ্রাম, ২ গ্রাম , ৭৪১ মিগ্রা ও ২৮০ মিগ্রা । এদের তুলনায় বর্নভিটা ও
বুস্টে এদের পরিমান অনেক কম থাকে।
তাহলে এখন বলুন কোনটা আসলে সুষম। দামের হিসাবে কিন্তু সবাই একই সমান প্রায়। সুতরাং আপনার শিশুর পুষ্টি চাহিদা ডায়েটিশিয়ানের কাছে গিয়ে করুন। বিজ্ঞাপনে মুগ্ধ হয়ে ভুল বুঝে না।
যাই হোক- জীবনের প্রথম ৬ মাস মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নাই। কিন্তু বছরের পর বছর যদি বাচ্চা কে সাপ্লিমেন্টারি ফুড না দিয়ে দুধের উপর নির্ভরশীল করে ফেলেন , তাহলে “মিল্ক ইঞ্জুরি” নামক রোগের শিকার হতে পারে আপনার বাচ্চা। সেই বাচ্চা ফুলাফাপা থাকবে (edematous) প্রোটিনের অভাবে। কিন্তু ভিতর দিয়া সব ধরনের নিউট্রিশনাল ডেফিসিয়েন্সি তে ভুগবে। তখন কই যাইবো গিয়া টলার স্ট্রংগার শার্পার।
# বিজ্ঞাপন মানুষের মাথায় ভুত হিসেবে ঢুকছে। আপনার বিবেচনা ও বিবেককে নষ্ট করে দিচ্ছে। সচেতন হোন নিজের জন্য । নিজের সন্তানের জন্য।

Popular Posts