Monday, 20 August 2018

কটা বাজে ?

যুবক : আঙ্কেল কটা বাজে ?
আঙ্কেল : বলবো না !
যুবক : কেন ?
আঙ্কেল : আরেকদিন যে কোনও জায়গায় দেখা হলে জিজ্ঞাসা করবে তাই।
যুবক : করতেই তো পারি !
আঙ্কেল : সে জন্যই বলব না
যুবক : কারণ টা কি ?
আঙ্কেল : এই ধর এই ভাবে কথা বলতে বলতে আমরা পরিচিত হবো !
যুবক : হতেই তো পারি আঙ্কেল !!
আঙ্কেল: হঠাৎ আমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাবে
যুবক : যেতেই তো পারি !
আঙ্কেল : চোখের সামনে পড়লে বাড়িতে আসতে বলবো ভদ্রতার খাতিরে
যুবক : এটা তো যে কোন ভদ্রলোকই বলবে !!
আঙ্কেল : বাসায় এনে বসতে দেব,তারপর চা এনে দেব!
যুবক : এটাই তো স্বাভাবিক !
আঙ্কেল : তারপর তুমি বলবে চা টা দারুন হয়েছে কে তৈরি করছে ??
যুবক : ভাল হলে তো বলতেই পারি !
আঙ্কেল : আমি বলবো আমার মেয়ে, তারপর তুমি বলবে দেখি আপনার মেয়েকে, এত ভাল চা বানায় !
যুবক : তাকে একটা ধন্যবাদ জানাইতেই পারি !
আঙ্কেল : ধন্যবাদ জানালে হাই, হ্যালো এসব হবে, কিছু কথাবার্তা হবে!
যুবক : হতেই তো পারে!
আঙ্কেল : তারপর মাঝে মাঝে আমার বাড়ি আসতে থাকবে !
যুবক : আসলে তো সমস্যা হবে না !
আঙ্কেল : এক সময় ভালোবাসা হবে, তোমার মিষ্টি কথায় আমার মেয়ে তোমার প্রেমে পড়তে পারে !
যুবক : কি যে বলেন আঙ্কেল লজ্জা লাগে !
আঙ্কেল : এক সময় বিয়ের জন্য প্রস্তুত হবে !
যুবক : প্রেম করলে তো বিয়ে করবো স্বাভাবিক !
আঙ্কেল : আমার কাছে চাইতে আসবে !
যুবক : গুরুজনের আশির্বাদ ছাড়া কি হয়, অবশ্যই আশির্বাদ চাইতে আসবো !
আঙ্কেল : তারপর আমার মেয়ে বলবে রাজি হয়ে যাও !
যুবক : আমাকে ভালবাসেতো তাই !
আঙ্কেল : SHUT UP
আমি এমন ছেলের কাছে মেয়ে বিয়ে দেব না যে একটা ঘড়ি কিনতে পারে না।

Friday, 17 August 2018

ঘোমটা

আমার বৌমা আমায় দেখে ঘোমটা দেয় না
হোক আধুনিকা, তাই বলে কি....!
খোকাও দেখেছি এই বিষয়ে বৌমা কে কিছু বলে না।
বেড়াতে বেরোয় সপ্তাহ শেষে
সে বেরোক, তাই বলে জিন্স প্যান্ট পরে!
পুরোনো দিনের মানুষ তো, বড্ড চোখে লাগে।
আধুনিকতার একি আদিখ্যেতা বুঝি না বাপু,
বড়োদের সম্মান দেওয়াটা ঠিক যেন ঠিক আসে না ওদের,
মোবাইল ফোনটা আসার পর সমাজটা উচ্ছন্নে গ্যাছে একেবারে।
আমার দাদুভাইকেও ওদের মতো মানুষ করছে
খটমট ইংরাজী বলে, ফোনে কিসব করে
কম্প্যুটার খুলে গেম খেলে কিসব,
আমি যেভাবে খোকাকে মানুষ করেছি
তার ধারেপাশেও যায়না ওদের অভিভাবকত্ব।
এক রবিবার আমাকেও জোর করে নিয়ে গেল সিনেমা দেখাতে
গিয়েই ঢুকে পড়ল হলঘরে, টিকিট নাকি ফোনে রয়েছে
বিশাল শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মোটা গদির চেয়ার ভরা হলঘর,
খোকা কিনে আনল প্রকান্ড এক ঠোঙায় ভুট্টাভাজা
বলল খেয়ে দেখো বাবা এটা পপকর্ন, তা বেশ খেতে ছিল।
আরামে বসে সিনেমা দেখলাম, মন টা ফুরফুরে হয়ে গেল।
সিনেমা দেখে বেরিয়ে এক রেঁস্তোরাতে খেতে নিয়ে গেল
দারুন সাজানো পরিবেশ, চেয়ারের জায়গায় সোফা,
আশেপাশে সবাই চামচে খাচ্ছে, হাতে খেতে ইতস্তত করছি
এমন সময় দাদুভাই বলল আমরাও আজ দাদুর মতো হাতে খাই।
খাওয়া সেরে বাড়ি ফিরে শুয়েছি, পেট ভার
এতো মশলা দেওয়ার খাবারের অভ্যেস নেই আর
শুয়ে এপাশ ওপাশ করছি অস্বস্তিতে
এমন সময় বৌমা এলো জোয়ানের আরক নিয়ে
বলল খেয়েন নাও বাবা, আরাম পাবে।
লাইট বন্ধ করে শুয়ে একটা কথায় মনে হল,
হোক না আমার বৌমা ঘোমটা ছাড়া
খোকা বেরোক না সপ্তাহ শেষে
দাদুভাই খেলুক না কম্প্যুটার গেম
ভালোবাসাটা তো আর আমার প্রতি কমেনি,
আধুনিক না হতে পারাটা আমার গোঁড়ামো।
মেকি ঐতিহ্যের ঘোমটা সরিয়ে দেখলাম
আধুনিক জগৎটাও ঠিক আমাদের জগৎটার মতোই।।

Tuesday, 7 August 2018

পনেরোই আগস্টের পরের দিন

প্রতি বছর পনেরোই আগস্টের পরের দিন
পাগলটাকে দেখা যায় এ গলিতে ও গলিতে ,
এ রাস্তায় ও রাস্তায় ,এ মোড়ে ও মোড়ে ,
ডাস্টবিনের পাশে ,নর্দমার ধারে।
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চষে বেড়ায়
শহরের এ কানা থেকে সে কানা,
কাঁধে বস্তা নিয়ে ।

সকালবেলা কৌতুহল বশে
জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তোমার নাম কী?
বলেছিল ক্ষুদিরাম ।

দুপুরে দেখলাম
পোষ্ট অফিসের সামনে ,
ডাস্টবিনে হাত ঢুকিয়ে কী সব খুঁজছে ,
বললাম ,কী খুঁজছ ক্ষুদিরাম?
উত্তর দিল,
আমি ক্ষুদিরাম নই ,প্রফুল্ল চাকী।
অবাক হলাম ।

বিকালে আবার দেখা ,
বললাম, প্রফুল্ল চাকী চা খাবে?
ও বলল আমার নাম কানাইলাল ।
এবার বিস্ময়।

সন্ধের মুখে বড় রাস্তার মোড়ে
জটলা দেখে থমকে দাঁড়ালাম।
জিজ্ঞাসা করলাম ,কী হয়েছে?
ভীড়ের থেকে একজন বলল,
একটা চোর ধরা পড়েছে।

ভীড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম ,
ল্যাম্প পোষ্টে বাঁধা
সকালের ক্ষুদিরাম
দুপুরের প্রফুল্ল চাকী
বিকালের কানাইলাল।
পাশে মাল বোঝাই বস্তা,
যা ছিল সকালে খালি।

একজন বলল ,ঐ বস্তায় আছে
চুরি করা জিনিস ।
খটকা লাগল ,জিজ্ঞাসা করলাম ,চুরি করেছ?
ও নির্বিকার, কোনো উত্তর দিল না।
আমি বস্তার মুখের বাঁধন খুলে
মাটিতে ঢেলে দিলাম ,
বেরোল ছেঁড়া ,ফাটা ,দুমড়ানো ,মোচড়ানো,
প্লাস্টিকের ও কাগজের যত জাতীয় পতাকা ।
রাস্তা ,ডাস্টবিন ,নর্দমা থেকে কুড়িয়ে
ভরেছে বস্তায় ।

মুহূর্তে ভীড় হল অদৃশ্য,
চোখ ভরা জল নিয়ে
বাঁধন খুলে দিলাম পাগলের।
আমার মুখের দিকে তাকাল একবার,
তারপর মৃদুস্বরে বলল,
যেন কেউ পা দিয়ে মাড়িয়ে না যায় তাই,
তারপর আবার পতাকা গুলো বস্তায় ভরে নিয়ে
চলে গেল দূর থেকে দূরে,
আমি দাঁড়িয়ে রইলাম স্থানুর মতো
অপার বিস্ময় আর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে ।

আপনাদের কাছে একটাই অনুরধ যে জাতিয় পতাকা রাস্তায় পোরে থাকলে ওটা দেখে চোলে যাবেন না...
জাতিয় পতাকা টাকে তুলে ভালো একটা নিদিষ্ট জাগায় রাখবেন.... 🇮🇳🇮🇳

Popular Posts